শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১০

১৯৭১ : যা কিছু আমার; আমার প্রথমসকল


জীবনে সর্বপ্রথম যে গানটি শুনেছিলাম

আপনাদের কি মনে পড়ে জীবনে সর্বপ্রথম কোন্‌ গানটি শুনেছিলেন?

এর আগে আমি অন্য কোনো গান হয়তো শুনে থাকবো, কিন্তু তার কিচ্ছুটুকুন আমার মনে নেই। বা গান বলে যে একটা বস্তু বা বিষয় আছে তাও হয়তো এর আগে বুঝি নি।

তবে এ গানটি গান হিসেবেই কবে কোথায় কিভাবে শুনেছিলাম তা আমার স্পষ্ট মনে আছে।

১৯৭১।
বর্ষার প্রথম পানিতে গাঁয়ের খাল ভরে গেছে। আমি বাবার সাথে চকে গেছি ধানক্ষেত দেখতে। সূর্য তখন পশ্চিমে হেলে পড়েছে। কিছু আগে সামান্য বৃষ্টি হয়ে গেছে, আকাশে ঝলমলে রোদ্দুর আর ক্ষেতের উপর বাতাসের ঢেউ সমেত গরমের হলকা।

বাবার সাথে গুটি গুটি পায়ে খালের পার ধরে বাড়ি ফিরছি। পারাপারের জায়গাটাতে এসে আমরা কিছুক্ষণ দাঁড়াই। এখানে ডাকের খেয়া নেই, পানিতে নেবে বা সাঁকোতে খাল পার হতে হয়। ওখানে সাঁকো ছিল না।

মামা সম্পর্কের একজন ভাটি থেকে উজান টেনে নৌকা বেয়ে আসছিলেন। তাঁকে দেখেই বাবা ডাকলেন, ও ইয়ার আলী, পার কইরা দেও।

ইয়ার আলী মামা নৌকা ভিড়ালেন। বাবা আমাকে সাবধানে উঠিয়ে মাঝখানে বসালেন। ছোটখাটো দু-একটা কথা। তারপরই নৌকা বাইতে বাইতে ইয়ার আলী মামা গেয়ে উঠলেন :

আমার সোনার বাংলা.........

আমার কাছে খুব ভালো লাগলো। এমন গান আগে শুনি নি। যা শুনেছি তা হলো বৃষ্টি নামানোর ছড়া, যা মেয়েরা বুনো ফুল আর চালুনি মাথায় নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘটীর পানিতে ভিজতো আর বৃষ্টির জন্য গাইতো।

কিন্তু.......আমার সোনার বাংলা.........এ তো এক আশ্চর্য গান! আমি মনে মনে চেষ্টা করি, অল্প অল্প পারি।

বাড়ি গিয়ে মাকে বলি, ইয়ার আলী মামু গান গাইবার পারে..........এ কথা দ্বারা কী বোঝাতে চেয়েছিলাম তা মনে নেই, কিন্তু আমি ঠিক এরকম একটা কথাই মাকে বলেছিলাম........ইয়ার আলী মামু সোনার বাংলা গান গাইছে।

এরপর সপ্তাহখানেকের মধ্যে আমি আরো একজনকে এ গানটা গাইতে শুনেছিলাম। তারপর আমি অনেকের মুখেই এ গানটা শুনতে পেয়েছিলাম। যেই এ গানটা গাইতো, আমি দৌড়ে তার কাছে গিয়ে, পিছে পিছে হাঁটতে হাঁটতে এ গানটা শুনতাম।

ভয়াল ২৫ মার্চের উত্তাপ তো এর কতো আগেই সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। আমি কি অতোসব তখন বুঝি? যা বুঝি তা এখানে লিখে রেখেছি ; তবে লেখাটি ১৯৯৯-এ নয়, ১৯৯৩-এ লিখেছিলাম।

'আমার সোনার বাংলা' আমাদের জাতীয় সঙ্গীত, এ তো জেনেছি অনেক পরে যখন বোঝার জ্ঞান হয়েছে। কিন্তু এ গানটার মধ্য দিয়েই আমার গান শোনার প্রথম অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তা ভাবতে গেলে খুব পুলকিত, বিস্মিত ও কেবল গর্বিত হতে থাকি আর আনমনে গেয়ে উঠি :

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি
চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি.........


যেদিন প্রথম পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলাম

ব্যাপারটা ভেবে আপনিও বিস্মিত হবেন- কখনো কি জাতীয় পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন? অনেকের এরূপ অভিজ্ঞতা থাকলেও আমাদের কিন্তু খুব কমই সুযোগ আসে জাতীয় পতাকা হাতে তুলে নেবার।

কোনো জাতীয় অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের অনেক অনেক আগে আমি একটা পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলাম। সেই মামুলি কাহিনীটা বলি।

সেদিন দুপুরে এক মিছিল এলো। ছেলেবুড়ো, যুবক সবাই সেই মিছিলে। তাদের কণ্ঠে উদাত্ত শ্লোগান। তাদের কারো কারো হাতে পতাকা। দৌঁড়ে যাচ্ছে মিছিল- দৌড়ে যাচ্ছে।

মিছিল গিয়ে জমায়েত হলো স্কুলের ময়দানে। চারদিক থেকে ছুটে আসতে লাগলো মানুষের ঢল। বিরাট মাঠ মানুষে ভরে গেলো। মাইকে অনবরত বেজে চলছে আমার সোনার বাংলা গানটি।

১৯৭১-এ আমার বয়স কতো ছিল জানি না। আর যেদিনটার কথা বললাম তখন বুঝি নি, শুধু জ্ঞান হবার পরই সুনিশ্চিত ধারণায় বুঝেছিলাম ওটা ছিল ১৬ই ডিসেম্বর। যখন গাঁয়ের রাস্তা জনস্রোত আর গগনবিদারী স্লোগানে টলোমল করছিল, হাতে ছিল পতাকা- কি মহোল্লাসে আমারও চিত্ত চঞ্চল হয়ে উঠেছিল- কি অভূতপূর্ব উত্তেজনা, এক দুর্দমনীয় নেশা হাতে একটা পতাকা ধরার জন্য। কিন্তু ন্যাংটো শ্রীযূতকে কে দেবে পতাকা?

আমার মতো আরো অনেকের হাতেও এমন পতাকা ছিল- তাই আর মুহূর্ত দেরি নয়, হাতের নাগালেই ছিল খড় নাড়ার কাড়াল, আর ছিল আমার প্রিয় মলিন গামছাটি। আমি কাড়ালের মাথায় গামছা বেঁধে এক পলকে বানিয়ে ফেললাম বাংলাদেশের পতাকা- আর দৌড়ে মিশে গেলাম রাস্তার মিছিলে।

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা এভাবেই আমার হাতে প্রথম এসেছিল।


স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিন

আমার সব 'প্রথমে'র রেফারেন্স পয়েন্ট হলো ১৯৭১। তখন বয়স কতো ছিল জানার উপায় নেই, কারণ কৃষকের ছেলের জন্মতারিখ লিখিত থাকে না, ধাইমার হাতে সে ভূমিষ্ঠ হয়; মা-চাচি-দাদি-নানিরা ঘোর বৃষ্টির দিনে, তুমুল তুফানের রাতে বাংলা মাসের 'অমুক তারিখে' বা 'অততম' চাঁদের দিন জন্ম হয়েছিল- এভাবে দিনতারিখ মনে রাখেন। তারপর নবম শ্রেণীতে রেজিস্ট্রেশনের সময় গড়পড়তা একটা জন্মতারিখ, যা চাকরিক্ষেত্রে সুবিধা দিতে পারবে অনুমান করে লিখা হয়ে থাকে, যাতে প্রায়শ প্রকৃত জন্মতারিখ থেকে বিস্তর ব্যবধান থাকে।

আমি বড্ড নিরীহ প্রাণী সেই ছোটকাল থেকে- কেবল ঘরের বাইরে; এজন্য কতো পিটুনি খেয়েছি পরের হাতে তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু ঘরের ভেতর আমার দুরন্তপনায় সবাই সবসময় ভীষণ অতিষ্ঠ থাকতো; বাইরে পরের হাতে মার, ঘরের ভেতর মায়ের পিটুনি খেতে খেতে আমার দফারফা অবস্থা।

সে পর্যন্ত দুবার খেজুর গাছ থেকে পড়ে মরতে মরতে বেঁচে উঠেছি। গাবগাছ থেকেও পড়েছি বেশ কয়েকবার। আর বাড়ির পাশে খালের ধারে একটা দইল্লা গাছ ছিল, উন্নার দিনে ওটাতে রসি দিয়ে পিঁড়ির দোলনা বানাতাম; আর বর্ষাকালে এ গাছটা ছিল আমাদের সবচেয়ে মজার জায়গা- করতাম কী, দল বেঁধে গাছের ডগায় উঠতাম, আর ঝাঁকে ঝাঁকে গাছের ডগা থেকে লাফিয়ে পানিতে পড়তাম। ডুব দিয়ে যে যতো বেশি দূরে গিয়ে উঠতে পারতাম, সে তত সেয়ানা। আমি এ কাজটায় বড্ড সেয়ানা হয়ে গিয়েছিলাম। মা কতো মানা করতেন, কিন্তু আমি কি আর মায়ের হাতের পুতুল?

একদিন আমার এমনি এক বিটকেলির শাস্তি স্বরূপ আমাকে বাম হাতে ধরে ডান হাতে পিঠের উপর দমাদম কিল ঝাড়তে ঝাড়তে মা মুখ দিয়ে আগুন বের করতে লাগলেন- তোর মতো পুলা আমি দুনিয়াতে রাহুম না- আমার কইলজ্যা খাইয়া হালাইলি তুই- পুলার পুলা, ক, গাছে গনে আরো লাফ দিবি? আরো লাফ দিবি?

আর আমার ছিল কইমাছের প্রাণ বা গণ্ডারের শরীর- মায়ের কিলে আমার কোনো ব্যথা হতো না, যদিও পিটুনি খাওয়ার সময় গলা ফাটিয়ে বাবা-বাবা বলে চিল্লানি দিতাম।

একটু বিরতি দিয়ে মা বললেন, তুই জানস তোর মতো পুলারা আইজকাল ইস্কুলে যায়? তোর সুরুজ মামু পরশু দিন গনে ইস্কুলে যাইতেছে। কতো বদ্র অইয়া গেছে সুরুজ।

সুরুজ মোল্লা আমার একমাত্র মামা, আমার থেকে তিন-চার মাসের বড়। মামা আমাদের বাড়ি আসে, তার সাথে কিছুক্ষণ ত্যাঁদরামি করি, সে ত্যক্ত হয়ে কান্নাকাটি করে বাড়ি চলে যায়। মামাও বেশ গোবেচারা বটে, আমার সামনে। সেই মামা স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে শুনে আমার কোনো ভাবান্তর হলো না; কেননা 'বদ্র'ই বা কী জিনিস, আর স্কুলে যাওয়ার মাহাত্ম্যই বা কী, গাছে গাছে বাস করার চেয়ে তাতে অধিক আনন্দ আছে কিনা সে বিষয়ে কোনো জ্ঞান তো ছিলই না, জানারও কোনো আগ্রহ ছিল না।

মায়ের পিটুনিতে ব্যথা না পেলেও মা-ই ছিলেন সাক্ষাৎ 'রাক্ষসী', আর বাবা ছিলেন সকল বিপদের নিরাপদতম আশ্রয়স্থল; যতোক্ষণ বাবা বাড়িতে, মা আমার টিকিটিও ছুঁতে পারতেন না, আর আমার থাকতো তখন সাত খুন মাফ।

মা একদিন সন্ধ্যায় বাবাকে মৃদু ক্ষোভের সাথে বলছেন, তোমার বান্দর পুলারে হয় তুমার সাতে ক্ষ্যাতে নিয়া যাইবা, নাইলে ইস্কুলে দিয়া দেও। ওর জ্বালায় আমার জানডা ত্যাজপাতা অইয়া গেলো।
বাবা হাসতে হাসতে বলছেন, কও কী, ইস্কুলের বয়স বড় অইছে নি? বয়স অইলে আল্লায় নিলে ইস্কুলেই বর্তি কইরা দিমু। আমার মতন লাঙ্গল টানবো নি বড় আমার পুলা।
বয়স অইছে না! মা ঝামটা দিয়ে বলেন, সুরুজ ইস্কুলে যাইবার নাগছে কবে গনে। সুরুজ কতো বদ্র অইয়া গেছে দ্যাকছাও না!
বাবা আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসেন।

এরপরের কিছুদিনের কথা ও ঘটনা আর মনে নেই। মনে পড়ে শুধু কথাগুলো- বাড়িতে প্রস্তুতি চলছে আমাকে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য। আজ না কাল, কাল না পরশু- এভাবে। বাবা বাড়িতে থাকলেই স্কুলে নিয়ে যাবে একদিন, কিন্তু বাবার সেই সময় আর হয়ে ওঠে না।

বাবার সময় হলো একদিন সকালে। আমার জন্য একটা বই কেনা হয়েছে- সবুজ সাথী। একটা শ্লেট আর মাটির পেনসিলও। সেগুলো গত কয়দিন ধরে নাড়াচাড়া করেছি, আর কেবলই বিষণ্ন হয়েছি যে এগুলোর জন্যই আমাকে স্কুলে যেতে হবে। আমার পুরনো হাফপ্যান্ট আর শার্টটা ৫৭০ সাবান দিয়ে ধুয়ে নতুনের মতো করা হয়েছে। কিন্তু সকালবেলা থেকেই আমার খুব মন খারাপ- খুব কান্না পাচ্ছে। মায়ের 'বদ্র' কথাটার অর্থ আমি না বুঝলেও এটুকু বুঝেছিলাম যে স্কুলে গেলে আমিও সুরুজ মামার মতো 'বদ্র' হয়ে যাবো- হায়রে, আমার দিনভর গাছগাছালি খেলা- এসব তো আর কিছুই করতে পারবো না- আমি তবে কিসের লোভে স্কুলে যাবো?

স্কুলে যাবার সময়টাতে পাড়াপড়শিরা ও বাড়ির সবাই জড়ো হলো আমাদের ঘরের সামনেটায়, আর ঠিক তখনই ডুকরে কাঁদতে শুরু করলাম। যতোই সময় ঘনিয়ে আসতে লাগলো বাড়ি হতে বের হবার, আমার কান্নার বেগ ততোই বাড়তে লাগলো, একসময় গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে লাগলাম- আমি ইস্কুলে যামু না। ইস্কুলে যামু না। আর আমার কান্না তখন এতোই করুণ হয়ে উঠেছিল যে বাবা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে তিনি নিজেও কেঁদে দিয়ে মাকে বললেন, তাইলে আইজক্যা বাদ দেই? কিন্তু মা শাসিয়ে উঠতেই বাবা আমার হাত ধরে বললেন, চলো বাজান- কাইন্দো না- ইস্কুল অনেক বালো জাগা।
আহারে কী কান্না না করেছিলাম সেদিন- আমি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি থেকে নেমে যাচ্ছি আর আমাকে বাড়িভর্তি মানুষজন দেখছে- আমি আমার সোনার দিনগুলো ফেলে চলে যাচ্ছি অন্যদিনের দিকে...

স্কুলে আমি ভালো করছিলাম। কয়েক বছরের মধ্যে পাড়াপড়শি ছাড়িয়ে পুরো গ্রামে আমার মেধার কথা ছড়িয়ে পড়লো। লোকে বলতে লাগলো- গোবরে পদ্মফুল।

আমার অজপাড়াগাঁয়ের স্কুলটাতে আমিই প্রথম প্রাইমারি বৃত্তি পরীক্ষায় পাশ করেছিলাম- এই বৃত্তির খবর নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ তিনজন শিক্ষক ও কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি যখন আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন- আমার মা হাউমাউ করে কেঁদে দিয়েছিলেন।

আমার মা মারা গেছেন আমি যখন ৭ম শ্রেণীতে পড়ি। প্রাইমারি স্কুল থেকে হাইস্কুলে যেয়েও আমি স্কুলে খুব ভালো করতে থাকি- আমার মা এ খবরে অতি আপ্লুত হয়ে বলতেন- তর মনে আছে, ইস্কুলে যাইবার দিন তুই কতো কাঁনছিলি?

ফেলে আসা দিনের অবিস্মৃত অনেক কিছুর মধ্যে স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিনটির কথা এভাবেই আমার ভেতর সতত ঝলমল করে আলো দেয়.........


রবীন্দ্রনাথের যে বইটি আমি প্রথম পড়েছিলাম

অনেকে মিটিমিটি হাসছেন- আমাকে হয়তো 'প্রথম' মুদ্রাদোষে পেয়ে বসেছে। একদম ঠিক। মাথায় কিছু আসছে না- না কবিতা, না গল্প, না অন্যকিছু। এ অবস্থায় বেশ কিছুদিন চলে যাওয়ার পর হঠাৎ হঠাৎ একেকটা জিনিসের কথা মনে পড়ে আর নিজেই নিজের কাছে প্রশ্ন করি- কবে যেন প্রথম এটা করেছিলাম!
এইতো সংক্ষিপ্ত পটভূমিকা।

মোটামুটি ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত আমি বইয়ের পোকা ছিলাম- সামনে যা পেতাম গোগ্রাসে কাটতাম আর চিবুতাম। তবে আপনাদের মতো অতো না আবার।

কিন্তু এতো বই কোথায় পাবো? সপ্তম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায়ই নবম-দশম শ্রেণীর বাংলা বই পড়ে ফেলেছি- বিশেষ করে গল্পগুলো। সেকালে আমাদের অজগ্রামে কেন, হাইস্কুলেও কোনো খবেরের কাগজ যেতো না। স্কুলে যে একটা লাইব্রেরী আছে তাও জানতে পেরেছিলাম অনেক পরে।

তো, এতো বই কোথায় পাবো? কিনে বই পড়ার মতো সামর্থ্য আমার ছিল না। তবে এখানে-সেখানে 'চটি' জাতীয় কিছু বই মাঝে মাঝেই ক্লাসমেটরা একত্র হয়ে রসিয়ে রসিয়ে পড়ি- এক হাত থেকে আরেক হাতে যেতে যেতে একসময় ভুলে যাই এর মালিক কে ছিল- ভুলে যাই বর্তমানে বইটা কোথায় কার কাছে আছে।

খুব পড়ুয়া পরিবারের দু-তিনজন ক্লাসমেট ছিল। বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানের দিন, যেমন নজরুল-রবীন্দ্র-জসীম উদ্‌দীন জন্মজয়ন্তীতে তাঁদের কবিতার বই ওরা নিয়ে আসতো। ওদের কাছ থেকে নিয়ে পড়তাম। বাসায় নিয়ে যেতাম। আমার এই পড়ার নেশা সম্বন্ধে ওরা যখন বুঝতে পারলো, নিজেরাই বললো- আমাদের বাসায় তো কাঁড়ি কাঁড়ি বই, পড়ার কেউ নাই। তুই পড়বি নি? পড়বার পারোস।

ওর নাম জাহিদ। বললাম, কাল আমার জন্য একটা বই নিয়া আসিস।

জাহিদ পরের দিন আমার হাতে যে বইটা এনে তুলে দিল ওটার মলাট ছিল না। মলাটের পরের সাদা পাতাটা ময়লা আর ছেঁড়াছেঁড়া মতো হয়ে গেছে। তাতে কী- বইটা হাতে নিয়ে পৃষ্ঠা উলটাতে থাকি।

শেষের কবিতা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমি তখন সপ্তম অথবা অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি, সঠিক মনে নেই। পাঠ্যপুস্তকে কবি-পরিচিতি আর শিক্ষকদের কাছ থেকে শোনা জ্ঞান থেকে অল্প অল্প চিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর- কাজী নজরুল ইসলাম- আর জসীম উদ্‌দীন। স্কুলে খুব আড়ম্বরের সাথে এঁদের জন্ম বা মৃত্যুদিবস পালিত হয়, অন্য কবিদের না- পাঠ্য বইয়ের কবিতা বা আর কারো কাছে পাওয়া বই থেকে মাঝে মাঝে অনুষ্ঠানে তাঁদের কবিতা পড়ি। তাঁদের সম্বন্ধে আর কতোটুকুই বা জানি!

আমি শেষের কবিতা পড়তে শুরু করি। ক্লাসের পড়া, বাড়ির কাজ আর খেলাধুলার সময় সহ বইটা পড়ে শেষ করতে আমার চার-পাঁচ দিনের মতো লাগে।

বইটা পড়ার সময় বিশেষ কয়েকটা অংশে আমি খুব আপ্লুত হয়ে পড়ি।

ভীরু যতীন্দ্র লাল চুপিসারে লাবণ্য'র ড্রয়ারে চিরকুট লুকিয়ে রাখতো- যাতে লেখা থাকতো লাবণ্য'র প্রতি তার নিবেদন, কিন্তু মুখ ফুটে বলার দুঃসাহস তার কোনোদিন হয় নি।

আরেকবার লাবণ্য অমিতকে নিয়ে চলে যায় সেই পাহাড়ের ধারে কোনো এক গোধূলিবেলায়, যেখানে দাঁড়িয়ে এমনি আরেকদিন লাবণ্যকে সে একটি আংটি পরিয়ে দিয়েছিল- লাবণ্য সেদিন এটা ফিরিয়ে দেয়।

বইটার এক জায়গায় গিয়ে আমার খুব খারাপ লেগেছিল, কান্না চলে এসেছিল। অমিত যোগমায়াদের বাড়ি গেছে। কিন্তু যোগমায়ারা আর আগের বাড়িতে নেই। "ঘর বন্ধ, সবাই চলে গেছে, কোথায় গেছে তার কোন ঠিকানা রেখে যায় নি'।" অমিত লাবণ্যের বসবার ঘরে গেল। "সেই ঘরটার মধ্যে বোবা একটা শূন্যতা। তাকে প্রশ্ন করলে কোন কথাই বলতে পারে না। সে একটা মূর্ছা, যে মূর্ছা কোনোদিনই আর ভাঙবে না।" তারপর অমিত নিজের কুটিরে গেল। যোগমায়া যা যেমন রেখে গিয়েছিলেন তেমনি সব আছে। এমন কি, যোগমায়া অমিতকে দেয়া তাঁর কেদারাটিও ফিরিয়ে নিয়ে যান নি। যেন স্নেহ করেই এই কেদারাটি তিনি অমিতকে দিয়ে গেছেন। অমিত যেন শুনতে পেল শান্ত মধুর স্বরে তাঁর সেই আহ্বান - 'বাছা'!

আর সবচেয়ে খারাপ লেগেছে লাবণ্য'র লেখা কবিতাটা, যা সে অমিতকে লক্ষ্য করে লিখেছিল :

কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও
তারই রথ নিত্যই উধাও

বুকের ভেতর মোচড় দিয়েছিল এ কথাটা- হে বন্ধু বিদায়। আমার সেই কচি মনে কেবলই মনে হতো- এরপরও আরেকটু থাকতে পারতো, এ কবিতার উত্তরে অমিতের কিছু একটা, তাহলে হয়তো মনটা প্রশমিত হতো। এমন ভেবেছি আরো অনেক অনেক বার।

এরপর আরো বহুবার শেষের কবিতা পড়েছি। শেষের কবিতা সম্বন্ধে অনেকেই বলে থাকেন- এ উপন্যাস পাঠের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই, এটা সর্বকালের সব বয়সের পাঠকের জন্য উৎকৃষ্ট ও যথোপযুক্ত রচনা- আপনি যে বয়সেই পড়বেন, মনে হবে আপনার বয়সের জন্যই এটা লেখা হয়েছে- আপনি যতোবার পড়বেন, ততোবারই এটা আপনার কাছে আনকোরা নতুন মনে হবে- মনে হবে এই কথাটা, এই লাইনটা তো আগের বার পড়ি নি।

নবম শ্রেণীর মাঝামাঝি সময় থেকে রবীন্দ্র সঙ্গীত আমাকে এমনভাবে পেয়ে বসলো যে বলতে গেলে অন্য কোনো গানই আমার ভালো লাগতো না। এই ভালো লাগার মূলে ছিল শেষের কবিতা, আর রবীন্দ্র সঙ্গীত রক্তের ভেতর ঢুকে যাওয়ার পর একদিন অনুভব করি- আমার রক্তকণিকায় শুধু গান আর সুরের তরঙ্গই বয়ে যাচ্ছে- অবিরাম অবিরল কলকল ছন্দে।


আমার চাচা কি একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না?

যুদ্ধ শুরু হবার ক'মাস পরই আমার একমাত্র চাচা চাকরির সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। আমার বুড়ো দাদী ছেলের জন্য কেবলই কাঁদতেন। কাঁদতে কাঁদতে চাচীর চোখ সারাক্ষণ ফুলে থাকতো।

চাচা বাড়ি ফিরেছিলেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার কয়েকদিন পর। আমরা অবশ্য ধরেই নিয়েছিলাম চাচা আর বেঁচে নেই।

সেই চাচা পুলিশের পোশাক পরে বাড়ি ফিরে এসে দাদীকে জড়িয়ে ধরে হাঁউমাঁউ করে কেঁদে উঠেছিলেন। চাচার গায়ে পুলিশের পোশাক দেখে প্রথমে আমি ভয়ই পেয়েছিলাম পুলিশভীতির জন্য। আসলে পুলিশ নয়, বাড়ি থেকে বের হয়ে চাচা আনসার বাহিনীতে যোগদান করেছিলেন।

সন্ধ্যায় খাওয়া দাওয়ার পর পরই দুয়ারে বিছানা বিছিয়ে চাচাকে ঘিরে বসে পড়তাম আমরা। চাচা যুদ্ধকালীন ভয়াবহ দিনগুলোর কথা বর্ণনা করতেন একনাগাড়ে। তাঁর কথা শুনে আমাদের গা শিউরে উঠতো।

বড় হয়ে বাড়ি ছাড়লাম, পড়ালেখা ও জীবিকার জন্য। বাড়িতে গেলে কোনো কোনো অবসরপূর্ণ সন্ধ্যায় আগের মতোই চাচার মুখে সেই যুদ্ধের কাহিনী শুনতে বসে পড়তাম। ২৫-৩০ বছর আগের কথা কি ঝলমলে ভাষায় বলে যেতেন চাচা, যেন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সদ্য ফেরত এলেন।

একটা আশ্চর্য ভাবনা মাত্র কয়েক মাস আগে থেকে আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে। চাচার কাছে তো কোনো মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র ছিল না- মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় কি তাহলে চাচার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল?

মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র, নামীয় তালিকা হালনাগাদকরণ- বড় হয়ে এই বার্নিং ইস্যুগুলোর সাথে সম্পৃক্ত হবার অনেক সুযোগ হয়েছে আমার- কিন্তু আশ্চর্য, একটি দিনের জন্যও আমার মনে হয় নি, দেখি তো চাচার নামটা কোন্‌ সেক্টরে দেখানো হয়েছে- দেখি তো চাচার নামটা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কিনা- আশ্চর্য, ঘুণাক্ষরেও এ বিষয়টি আমার মনে উঁকি দেয় নি। এমনকি আমার চাচাকেও কোনোদিন বলতে শুনি নি- আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। শুধু যখন যুদ্ধের দিনগুলোর কথা আলোচনা প্রসঙ্গে কোথাও উঠে আসতো- দেখতাম কি অনর্গলভাবে চাচা বলে যাচ্ছেন- কিভাবে জঙ্গলে জঙ্গলে রাত কাটাতে হয়েছে- গুলিবিদ্ধ সহযোদ্ধাদেরকে কিভাবে তাঁরা শুশ্রূষা করেছেন- এসব।

নিজেকে যখন খুব অপরাধী মনে হলো- তখন একবার মনে মনে ভাবলাম খুঁজে দেখি চাচার নামটা সত্যিই মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় আছে কিনা। পরক্ষণেই ভাবলাম- কী লাভ, চাচার নামটা কোথাও খুঁজে না পেলে তো শুধু আমার কষ্টই বাড়বে, আর কিছু না তো। আমার দরিদ্র চাচা জীবিতাবস্থায় জীবিকার জন্য অনেক কঠিন সংগ্রাম করে গেছেন, তিনি হয়তো জানতেনও না 'দরিদ্র' মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকার থেকে কী কী সুবিধা দেয়া হচ্ছে, এ নিয়ে তাঁকে কোনোদিন একটা কথাও বলতে শুনি নি সরকারে বিরুদ্ধে- যুদ্ধ করলাম, অথচ সরকার আমারে কিছুই দিল না।

আমার চাচার নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় না থাকলে এমন কীই বা ক্ষতি আমার বা চাচার পরিবারের? তাতেই তো আর প্রমাণিত হলো না যে আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। আমার চাচা যে একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তার সবচেয়ে বড় দলিল তো আমি নিজে- এখনো চোখের সামনে উজ্জ্বল ভাসে- যুদ্ধ শেষ হবার পর কোনো এক বিকেলে চাচা বাড়ি ফিরে এলেন- আমার দাদী 'আনছের আনছের' বলে চাচার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লেন- সেই দৃশ্য আজও এতোটুকু ম্লান হয় নি।

আমার মুক্তিযোদ্ধা চাচা দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভোগার পর ২০০৬ সনের ১৪ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। আপনারা আমার চাচার রুহের মাগফেরাত কামনা করবেন প্লিজ।


বিদেশের মাটিতে দেশের স্মৃতি

আমি জীবনের একেকটা সময়ে একেকটা জিনিসের পোকা ছিলাম।

খুব ছোটবেলায় ঘুড়ি উড়ানোর পোকা ছিলাম।
ষষ্ঠ থেকে ১২শ শ্রেণী পর্যন্ত বইয়ের পোকা। ঠিক এই সময়েই রেডিও'র পোকাও ছিলাম। ঘুমানোর সময় কানের কাছে মৃদু ভলিয়্যুমে রেডিও ছেড়ে রাখতাম, স্বপ্নের ভেতর গান শুনবো বলে। এর একটু পরে ক্যাসেট প্লেয়ারের পোকা হয়ে পড়লাম। নতুন ক্যাসেট বেরোলেই কিনে ফেলা, পছন্দের গান রেকর্ড করা। রাতভর ননস্টপ গান ছেড়ে রাখা আর স্বপ্নের ভেতর গান শোনা(পার্শ্ববর্তীরা কেউ কেউ উপভোগ করতেন, বেশির ভাগই বিরক্ত হতেন)।

এর পরের সময়টা খুব ভয়াবহ ছিল। আমি টিভির পোকা হয়ে গেলাম। তখন শুধু একটাই চ্যানেল- বিটিভি; পৌনে তিনটার সময় প্রাক-অনুষ্ঠানাদি শুরু হতো, তিনটায় আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে চলতো সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত। কোরআন তেলাওয়াত ও বাংলাদেশের পতাকা উড়ানোর মধ্য দিয়ে দিনের অনুষ্ঠান শেষ হতো। আমি খুব মনমরা হয়ে টিভিরুম ছাড়তাম।

১৯৯৩-এ আইসিসিতে কেনিয়ার কাছে পরাজয়ের মাধ্যমে ১৯৯৬ বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের খেলার স্বপ্ন তিরোহিত হয়ে গেলে যে কষ্ট পেয়েছিলাম, ১৯৯৭-এ সেমিফাইনালে আয়ারল্যান্ডকে হারানোর মাধ্যমে ১৯৯৯-বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলার সোনার ভিসা পেয়ে গেলেও ১৯৯৩-এর ক্ষত বুকের ভেতর রয়েই গেলো। তবে আমি ক্রিকেটের পোকা হয়ে গেলাম ১৯৯৩-এ বাংলাদেশের হারের পর থেকেই- খেলোয়াড় হিসেব খুব সামান্যই, তবে ক্রিকেট সাবজেক্টটা আমার কাছে সবচেয়ে স্মার্ট, আকর্ষণীয় ও উপভোগ্য হয়ে উঠলো; ক্রিকেটের যাবতীয় তথ্য হাতের কাছে চলে এলো। ক্রিকেট উন্মাদনা চললো ২০০৪ পর্যন্ত। এর মাঝখানে ২০০১-এ বছর খানেকের জন্য বিদেশে ছিলাম, সেখানে স্যাটেলাইটে ক্রিকেট দেখার সুযোগ না পেলেও ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের সর্বকালের সেরা সময়টা কাটিয়েছি সেখানেই। ইন্টারনেটে ক্রিকেট আমার নেশা হয়ে গেলো। আমার ঘুম, নাওয়া-খাওয়া হারাম হয়ে গেলো, আমি ক্রিকেটের নানান তথ্য ডাউনলোড করি আর একের পর এক সিডিতে তা রেকর্ড করি।

এ লেখাটায় যা লিখবো তা হলো সেই বিদেশের দিনগুলোর কথা।

মানুষ কোনো কিছুরই দীর্ঘদিন ধরে পোকা হয়ে থাকতে পারে না, একঘেঁয়েমি দানা বাঁধে ধীরে ধীরে। বিদেশের মাটিতে এক সময় ইন্টারনেটও আর মন ধরে রাখতে পারলো না। দেশের মাটিতে, অনেক অনেক দূরে, ১৪ হাজার মাইল দূরে, বউয়ের ছবি, ছেলের ছবি, মেয়ের ছবি, বাবার ছবি, মায়ের ছবি, ভাইবোন, বন্ধুবান্ধবদের ছবি খুব করুণ ভাবে চোখে ভেসে ওঠে, আর নীরবে চোখের কোণা জ্বলে যেতে থাকে।

এই বিষণ্ণতা কাটানোর কতো রকমের পদ্ধতি আমাদের।

এর আগে একবার পাকিস্তান গিয়েছিলাম মাস তিনেকের জন্য। সেখানেও এরকম হোমসিকনেস পেয়ে বসেছিল। কী আর করা, সস্তায় একটা ৭ ইঞ্চি রঙিন টিভি কিনেছিলাম।

পাকিস্তানের সেই ছোট্ট টিভিটা এবার আমার রুমে। রুমমেটের একটা ভিসিআর আছে, আমার আছে আরেকটা ক্যাসেট প্লেয়ার। বিকেল হলেই আমাদের রুমে আড্ডা বসে। আমরা ৩-৪ হালি বসে যাই তাস খেলতে।

আমরা তাস খেলি, আর ব্যাকগ্রাউন্ডে আমার ক্যাসেট প্লেয়ার বাজে। আমার অনেকগুলো ক্যাসেটের মধ্যে একটা ক্যাসেটে আরও বছর আষ্টেক আগে রেকর্ড করা কিছু নির্বাচিত গান ছিল। সেই ক্যাসেটটা বাজে। এ ক্যাসেটের গানগুলো সঙ্গত কারণেই আমার প্রিয় গান।

একদিন খেলা চলাকালীন সময়ে অন্য আরেকটি ক্যাসেট বাজাতেই সবাই সমস্বরে বলে উঠলো : তোমার ঐ ক্যাসেটটাই লাগাও।

রাত ২-৩টা পর্যন্ত আমাদের রুমেই খাওয়া-দাওয়া চলতো, তাস খেলা ও আড্ডা দেয়া চলতো। আর মাঝে মাঝে ছবি দেখা।

সব ছবি যখন শেষ হয়ে গেলো, তখন আমরা বাংলাদেশী বাংলা ছবি দেখা শুরু করলাম। দেশ থেকে বাংলা ছবি পাঠানো হতো। মনে হতো, এসব বাংলা ছবির চেয়ে ভালো কোনো ছবিই হতে পারে না। শাহনাজ, শাবনূর, একা, পপি নামে যে বাংলাদেশী বেশ কিছু ভালো নায়িকা আছে, বিদেশের মাটিতে না এলে হয়তো তাঁদেরকে চেনাই হতো না। জেনিফার লোপেজ বা ঐ সময়ের হটকেক কারিনা কাপুরকে খুব নস্যি মনে হতে লাগলো। কারো প্রিয় নায়িকা শাবনূর, কারো একা, কারো পপি, ইত্যাদি.....

সবাই যখন যার যার মতো রুমে চলে যেত, একটা ছেলে রয়ে যেত। খালেদ। ওর তিনটা মেয়ে। প্রথমটার বয়স ৮, পরের দুটো টুইন, ৩-৪ বছর হবে হয়তো।

খালেদ নিজে নিজেই ক্যাসেট প্লেয়ার অন করতো। রিওয়াইন্ড বা ফরওয়ার্ড করে ও দুটো গানই বার বার শুনতো। শুনতো আর চোখ মুছতো।

ঐ গান দুটো আমারও খুব প্রিয়। আমি আজও পরিবার ছেড়ে দূরে কোথাও গেলে ঐ গান দুটো খুব শুনি আর কাঁদি।

প্রিয় বন্ধুরা, শুধু এই গান দুটোর জন্যই এই দীর্ঘ বাতুলতা।

স্মৃতি ঝলমল সুনীল মাঠের কাছে পানি টলোটল মেঘনা নদীর কাছে আমার অনেক ঋণ আছে
আমার মনপাখিটা যায়রে উড়ে যায় ধানশালিকের গাঁয় নাটাবনের চোরাকাঁটা ডেকেছে আমায়


আমার দেখা প্রথম ছায়াছবি
০৫ ই মে, ২০০৯ সকাল ১১:৫১

দশ-এগার বছর বয়সের কালে মায়ের চোখে ধূলি দিয়ে দুই মহাধূরন্ধর বন্ধুর সাথে পদব্রজে বাড়ি থেকে তিন মাইল দূরবর্তী জয়পাড়া সিনেমা হলে গিয়ে জীবনের প্রথম ছায়াছবিটি দেখে রাত দশটার দিকে বাড়ি ফিরে এসে মায়ের হাতের সালুন নাড়ার লাঠিতে বেধড়ক ধোলাই খেয়ে আমাকে একটুও কাঁদতে হয় নি। সিনেমা দেখার উত্তেজনা ও আনন্দ এবং বিস্ময়ে আমি এতোখানিই ঘোরের ভেতর ডুবে গিয়েছিলাম যে এসব জাগতিক বিষয়আশয় তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয়ের চেয়েও গৌণতর জ্ঞান হচ্ছিল। এরপর অবশ্য প্রায় মাস দেড়েকের মতো আমাকে ঘরের ভেতর অন্তরীণ করে রাখা হয়েছিল; আমি নাকি সেয়ানা হয়ে গেছি, রাতবিরাতে ঘরের বাইরে থাকি, এই সেয়ানাগিরি ছোটানোর জন্য মায়ের এই কার্ফিউ ব্যবস্থা ছিল।

ছবির নাম বুলবুল-এ-বাগদাদ।

ছবি দেখার খায়েস অনেক আগে থেকেই ছিল। আর ছায়াছবি নামে যে অত্যাশ্চর্য একটা বস্তু আছে তা অবশ্য জানতে পেরেছিলাম এর বছর দেড়েক আগে, যখন জয়পাড়া বাজারে প্রথম বারের মতো প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হলো। পুরো দোহার, শ্রীনগর ও নবাবগঞ্জ উপজেলা মিলিয়ে দ্বিতীয় আর কোনো সিনেমা হল তখন ছিল কিনা সে সময়ের জ্ঞান নিয়ে তা জানা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। শুধু এটুকু ভাবা খুব সহজ ছিল, ইশ, আমাদের বাসা যদি ঢাকা শহরে থাকতো তাহলে সবগুলো সিনেমা হলে ঘুরে ঘুরে এক সপ্তাহে অনেকগুলি ছবি দেখতে পারতাম।

সিনেমা হলে ঢুকেই দেখি একেবারে প্রথম সাড়িতে আরেক মহাধূরন্ধর ক্লাসমেট। আমি পাশের দুজনকে বলি, ঐ, সামনে তো কতো সিট খালি, চল্‌ সামনে যাইয়া বসি।
ওরা দুজন সেয়ানারও সেয়ানা। আমাকে ধমক দিয়ে বলে, চোপ ভোদাই, ঐডা অইল থার্ড ক্লাস, আমরা বইছি সেকেন্ড ক্লাসে।
আমার কাছে খুব আশ্চর্য লাগলো। সামনের সারিটা থার্ড ক্লাস হয় কিভাবে? আমি নিজেকে মনে মনে একটু বেশি বুদ্ধিমান ভাববার চেষ্টা করি, আর বলি, তোমরা ভোদাই কিচ্ছু জানো না।
এর পরের দুবার আমি সামনের সারির টিকিট কিনেছিলাম; আর সামনের সারিটা কেন যে ফার্স্ট ক্লাস না হয়ে থার্ড ক্লাস হলো, তা বুঝতে আমার আরও বছর খানেকের মতো সময় লেগেছিল।

পতাকা উত্তোলনের সাথে সাথে সবাই দাঁড়িয়ে গেলো। আমিও দাঁড়ালাম। শরীরে এক প্রচণ্ড অনুভূতি, যা বোঝানোর কোনো ভাষা নেই। সামনে এতোক্ষণ একটা ধবধবে সাদা পর্দা ছিল। ছবি শুরুর আগে সঙ্গী দুজনকে একের পর এক প্রশ্নে ঝাঁঝরা করে ফেলেছি- এতোটুকু জায়গায় জীবন্ত একটা শহর বা গ্রামের মানুষেরা কিভাবে চলাফেরা করে? ছবির মানুষগুলো কি সত্যিই নড়াচড়া করে, নাকি বায়স্কোপের মতো একের পর এক ছবি ভেসে ওঠে পর্দায়? সঙ্গী দুজনের মুখে ছবির গল্প শুনতে শুনতে আমার মনে এসব প্রশ্ন দেখা দিত।

জাতীয় পতাকা নামতেই তীব্র খটাখট খটাখট শব্দে কয়েক সারি ঘোড়া চোখের সামনে দিয়ে মরুভূমির এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের দিকে ছুটে গেলো। এরপর আরো কয়েক সারি ঘোড়ার দুরন্ত ছোটাছুটি। আমি যুগপৎ বিস্মিত, চমৎকৃত ও উল্লসিত, আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে যাচ্ছে, চোখের সামনে যা দেখছি তা আমার কল্পনার জগৎ ছাড়িয়ে অনেক অনেক দূরের এক মহাবিস্ময়।

একটা ঘোড়া থামলো। ঘোড়ার পৃষ্ঠ থেকে নেমে খট খট কদম ফেলে যে অতিশয় সুদর্শন রাজকুমার রাজদরবারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে- সঙ্গীরা জনালো তাঁর নাম ওয়াসীম। আমি সত্যিই বিমোহিত হয়ে গেলাম ওয়াসীমের সোন্দর্য দর্শনে।

এরপর কিছু জাদুদৃশ্যও বোধ হয় ছিল। বিকট চেহারার এক দৈত্য ও তার অট্টহাসি দেখে ভয় পাচ্ছিলাম। সঙ্গীরা জানালো- তার নাম জাম্বু।

মাঝে মাঝেই তরবারি-যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধ আর ঘোড়দৌড় আমার কাছে সর্বাপেক্ষা আকর্ষণীয় মনে হচ্ছিল।

আমার ঘোরলাগা বিস্ময় আকাশ ছুঁলো রাজকুমারীর দৃশ্যে। রাজকুমারী তার শয়নকক্ষে শায়িতাবস্থায় ছিল; সেখানে রাজকুমার ওয়াসীমের প্রবেশ। চমকে শোয়া থেকে উঠে বসে রাজকুমারী, আর এ দৃশ্যটা তিনবার করে দেখানো হচ্ছিল। ও-বয়সেই রাজকুমারীর রূপলাবণ্য দেখে আমি দিশেহারা হয়ে গেলাম। আমার কী যে ঘোর লেগে গেলো!
রাজকুমারীর নাম অলিভিয়া।
তারপর বিশ্বাস করুন, জীবনে কতো নায়িকাদেরই তো দেখলাম, অলিভিয়া জীবন ভর আমার কাছে স্বপ্নের রাজকন্যা হয়েই থাকলো, তার মতো অপরূপা সুন্দরী নায়িকা আর কাউকেই পেলাম না।

বিপুল উচ্ছ্বাস আর উত্তেজনার ঘোরে ছবি দেখা শেষ করে রাত সোয়া নয়টার দিকে জয়পাড়া সিনেমা হল থেকে আমরা ত্রিরত্ন মায়ের কোলে ফিরে আসতে হাঁটা ধরলাম।

বিনীত নিবেদন : কেউ যদি দয়া করে অলিভিয়ার একখানা ছবি এখানে পেস্ট করেন, কৃতজ্ঞ থাকি।





**বিভিন্ন সময়ে লেখা হয়েছিল

কবিতাকুসুমমঞ্জরি

শ্বেত পতাকা
০৭ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:২৬

এবার ছুটি নেব তিনদিন, তারপর ঘুমাবো না
অসম্ভব ব্লগাবো আর বউয়ের হাতে খাবো তিনবেলা ক্ষীর
অনেকের সাথে খুব কষাকষি- এই ফাঁকে মেটাবো সকল বনিবনা
সবকিছু দেখেশুনে 'ক্ষেপিয়া গিয়াছি', এবার মনকে চাই সুবোধ-সুস্থির

তুমি যদি ভালোবাসো সন্ততির ঘেঁষাঘেষি, আলাভোলা আটখানা হাসি দিনভর
একবেলা ঘুরে যেয়ো গরীবের ঘরে, সহচর

আমার ভুলের সাজা দিও তুমি আপন দু হাতে
তারপর বাকি বেলা পাশাখেলা তোমাতে-আমাতে


তুই যদি
০৮ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:২২

তুইতো বউ হলি না, হলি না প্রেমিকাও
সম্পর্ক আর অসম্পর্কের মাঝগাঙে তোর নাও

গৃহের ধ্যানে গুটিয়ে গেছিস; আমিও তাই
গৃহেই জ্বালি তোর রোশনাই

বউকে প্রেম দিই, যার চেয়ে ঐশ্বর্য কিছু নেই
তোকে দিই মুহূর্তকবিতা, না চাইতেই

না-চাওয়া ফল খায় না কেউ সুমিষ্ট নয় বলে
জানি, তুইও এসব ফেলেই দিবি; দলবি পদতলে

২৩ আগস্ট ২০০৮


তোমার নির্দেশ
১০ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:২৩


তুমি কি নজরুল হবে? কিংবা সুকান্ত?
রবীন্দ্রনাথও বাঁচবেন আর বড়জোর দুশোটি বছর
ঈশ্বরপূর্ব কজন কবিকে মানুষ রেখেছে মনে?

অতঃপর অচিরেই তুমিও নিমজ্জিত ইতিহাস

তুমি তো মাইকেল হবে না, অথবা জীবনানন্দ দাশ

এতো লিখো না
কী কাজ প্রতিদিন মহাকাব্য লিখে?
সপ্তাহে একটি কবিতা অনেক বেশি
মাসে একটা সংযম প্রকাশ
ভালো হয় এক বছরে একটাই
সবচেয়ে ভালো সমগ্র জীবনে একটি কবিতা
তুমি লিখো, যা পড়ে তোমায় আমার
কবি জ্ঞান হবে

এতো লিখো না ছাইপাশ

লেখনিরও বিশ্রাম চাই, মস্তিষ্কে নিয়মিত সার
সঙ্গমেও যেমন থাকা চাই সাপ্তাহিক ছুটির দিন

আর শোনো
আমায় নিয়ে কবিতা লিখো না আর কোনওদিনও

০৩ আগস্ট ২০০৮


সে আর আসবে না
১৯ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ৯:৪১

সে আর আসবে না
এক কষ্মিনকাল ডুবে গেলেও পদ্মার পললে
পাহাড় ভেঙে ভেঙে আকাশ আরও ক্ষয় হলেও

সূর্যাস্তে হারিয়ে যাওয়া দিনের তারার মতো
নিভেছে তার মুখ
রাতের শুরুতে

আমি তার দু:খ জানি না
আমি তার জানি না অভিমান
আমি তার কুশল জানি না
আমি তার ঠিকানা জানি না আজও

ধূলোর শরীরে চরণচিহ্ন নষ্ট পাখির
ছায়ার মতন স্মৃতিরা লুটোয় অন্তরালে

রঞ্জনরেখায় ভুলের এপিটাফ
তার আলোয় ভাসবে না

সে আর আসবে না


কী কী কারণে বউ বা প্রেমিকাকে ভালোবাসেন!!
২৮ শে মার্চ, ২০০৯ রাত ৮:০৬

বউ বা প্রেমিকাকে কেন ভালোবাসেন তার এক হাজারটা কারণ খাতায় লিখে ফেলা সম্ভব এটা করবেন না, তাতে আপনার ভালোবাসা বা ভালোলাগার কারণগুলো সীমিত হয়ে গেলো ভালোলাগার কারণগুলো সংখ্যায়িত করা যায় না; কোনো নির্দিষ্ট কারণে ভালোবাসেন না; ভালোলাগার মূল কারণগুলো অনেক সময় খুঁজেও পাওয়া যায় না, এতোটা অজ্ঞাতবাসী

‘তোকে ছাড়া আমি বাঁচবো না’, অহনা এক দিবসে এ কথাটা আমায় একশত বার বলতো ‘কেন আমায় এতো ভালোবাসিস, তার তিনটি কারণ আমায় বল্ তো সোনা’, আমি খুব আগ্রহ নিয়ে ওর কাছে এক দিবসে একশত বার এর উত্তর জানতে চাইতাম জানার জন্য আমি যতোই অস্থির হয়ে উঠতাম, অহনা ততোই শান্তসৌম্য ভাব নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো

তিন বছরের মাথায় অহনা ওর এই ‘ভালোবাসা-দর্শন’ আমাকে জানালো; তারপর আমাকে পাগলের মতো এতো ভালোবাসার একটা কারণও না জানিয়ে চলে গেলো


দেয়াললিখন; দ্রোহকথা
০১ লা এপ্রিল, ২০০৯ রাত ৯:৩৯

তুমি লেখো আর ভাবো, রোজ রোজ আমি গিয়ে গোপনে পড়ে আসি তোমার দ্রোহকথা
জেনে রাখো, আমিও লিখে রাখি দেয়ালে দেয়ালে তোমার ইতিহাস, রোজকার কৃতঘ্নতা
সন্ধির কথা বলে বহ্নিতে ঘৃত ঢালো, এ তোমার জন্মজাত কুটিল স্বভাব
তারপর আহাজারি, শুরু হয় ডিপ্রেশন, লোকদেখানো দাহ-অনুতাপ

তুমি কি ছিনাল তবে? তার চেয়ে ভালো হতো, হতে যদি পথের সারমেয়
আকাশে ছিটিয়ে থুথু আমার কী করো ক্ষতি? নিজেকেই করো তুমি হেয়


সঞ্জীবনী
০৪ ঠা এপ্রিল, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৭

তোমার সান্নিধ্যে ফোটে অপার্থিব পরকীয়া ফুল
সঙ্গমমুখর আগুন ও হলাহলে
পুংসক জীবনে নিয়ত সঞ্জীবন

চাঁদের কৌলীন্যে সঙ্গম দাও তুমি
অমোঘ বিনোদে ঘন হয় বিদগ্ধ নেশা
গোপনে নদীর মনে গলে যায় নিজঝুম ঢেউ

তারপর কিছুই থাকে না মন ও শরীরে


দু:খিনী মেয়েটার কথা
১০ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১২:১২

মেয়েটা দু:খিনী খুব
তীব্র ডিপ্রেশনে রোজ রোজ সে কাঁদে
আর ভালোবাসা সাধে

একদা তুফানের কালে ডেকে নিয়ে শয্যায়
রাতভর অপূর্ব সঙ্গম দিল সুনিপুণ দক্ষতায়

সেই ছিল শুরু

এখন আর সে কাঁদে না, ভালোবাসাও সাধে না
অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকে আশ্চর্য এক হাসনাহেনা


আবার দেখা হবে
১৫ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ১১:২৩

জন্ম
সংসার
প্রাত্যহিক অস্থৈর্যে
আমাকে
নিয়ত সংকেত জানায় বিভাসিত সমুদ্রের ঢেউ

তোমাকে-না-পাওয়া পুরোটা জীবন
জ্বলন্ত চলায় ছাই হয়ে গেলো
আর শোনো, ছাইকণাদল
তোমার নামে অনর্গল
জপিছে ‘'আনাল হক’

আল্লাহ্‌র আরশে
তোমার একমুঠো ছোঁয়ায়
ভিজিয়ে নিতে বিখণ্ডিত আত্মারে
পৃথিবীর দোজখে গুনছি প্রহর

দেখা তো হবেই সুনিশ্চিত


কবিতার মেয়ে
২০ শে এপ্রিল, ২০০৯ দুপুর ১২:৩০

প্রতি সন্ধ্যায় আমার শণের কুটিরে সে আসে
হাসনাহেনার তীয়র অন্ধকার তার গায়; আমি তার শরীর দেখি না, সুরভি দেখি

'কবিতা পড়ো' : গভীর অনুজ্ঞায় বসতে বসতে করুণ চৌকাঠে
বিমূর্ত মহিয়সী

আমি তাকে পড়ি আর তার কবিতা; মূলত সমগ্র সত্তা ও প্রেমের প্রতীতি
কবিতার ভেতর তাকে বেঁধে নিই দিঘল প্রসাদে

নিজ্‌ঝুম সে বসে থাকে, স্মিত ওষ্ঠে তৃষ্ণার কণারা শব্দতরঙ্গে অন্ধকার

তারপর কবিতা পাঠের শেষে
যাবার বেলা সুমিতকণ্ঠী এটুকুই বলে : হয় নি


আমি তো কবিত্ব চাহি না সন্ন্যাসিনী; তোমার সকাশে শুধু অনুজ্ঞা চাহি


পউমচরিউ : মহাকবি স্বয়ম্ভূদেব
০২ রা মে, ২০০৯ রাত ১০:৪৪

বু হয়ণ সয়ম্ভূ পঁই বিন্নবই
মহু সরিসউ অণ্ন ণাহি কুকই।।
বায়রণু কয়াই ণ জাণিয়উ
ণউ বিত্তি-সুত্ত বক্‌ খাণিয়উ।।
ণা ণিসু ণিউ পঞ্চ সহায় কব্বু
ণউ ভরহ ণ লক্‌খণু ছন্দু সব্বু।।

(প্রথম দিকের ছয় চরণ)


উপরের ৬ চরণের অর্থ :

আমি ব্যাকরণ কিছু জানি না, বৃত্তিসূত্র ব্যাখ্যা করতে পারি না আমি পঞ্চ মহাকাব্য শ্রবণ করি নি এবং মহাকবি ভরতের সর্বপ্রকার ছন্দ লক্ষণের উপরও আমার অধিকার নেই


৪০০০ সালের কবিতা
০৪ ঠা মে, ২০০৯ রাত ১২:৫৩

কবিতা কিংবা গদ্যর ভেতরকার সব পার্থক্য বিলীন হয়ে সকল কবিতা গদ্যর ভেতর আর সকল গদ্য কবিতার ভেতর ডুবে গিয়ে একাকার হয়ে যাবে আমাদের লেখাঝোকার আদিরূপ পদ্যনির্ভর ছিল, যা ছিল বেজায় আভিজাত্যের প্রতীক এরপর আমরা গদ্যেই উৎকর্ষ হয়েছি বেশি কবিতার চেয়ে, আর কবিতা এখন তুমুল গদ্যমুখি

৪০ শতকের সরহপাগণ গদ্যে আধুনিক চর্যাগীতিকা লিখবেন; একজন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী অথবা ড: মুহম্মদ শহীদুল্লাহ 'মেঘনাদ বধ' কিংবা 'গীতাঞ্জলি'র মমি খুঁজে বেড়াবেন বাংলা থেকে বাংলান্তরের গ্রন্থকুঞ্জে এসব বড্ড দুষ্প্রাপ্য মহামূল্য ফসিল! একেকটা প্রাপ্তি একেকটা দিগ্বিজয় আর বিস্ময়ের ঘোর

কখনো ভয় হয়, তাঁরা হয়তো হেসে কুটিকুটি হবেন আমাদের এ যুগের কবিতা পড়ে


শুধ কবিতার জন্য :: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
০৯ ই মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:৫২

শুধু কবিতার জন্য এই জন্ম, শুধু কবিতার
জন্য কিছু খেলা, শুধু কবিতার জন্য একা হিম সন্ধেবেলা
ভুবন পেরিয়ে আসা, শুধু কবিতার জন্য
অপলক মুখশ্রীর শান্তি একঝলক;
শুধু কবিতার জন্য তুমি নারী, শুধু
কবিতার জন্য এতো রক্তপাত, মেঘে গাঙ্গেয় প্রপাত
শুধু কবিতার জন্য, আরো দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে লোভ হয়
মানুষের মতো ক্ষোভময় বেঁচে থাকা, শুধু
কবিতার জন্য আমি অমরত্ব তাচ্ছিল্য করেছি


তুমি :: নীল উপাধ্যায়
০৬ ই মার্চ, ২০০৯ রাত ৯:১০

আমার যৌবনে তুমি স্পর্ধা এনে দিলে
তোমার দু'চোখে তবু ভীরুতার হিম
রাত্রিময় আকাশের মিলনান্ত নীলে
ছোট এই পৃথিবীকে করেছো অসীম

বেদনা মাধুর্যে গড়া তোমার শরীর
অনুভবে মনে হয় এখনও চিনি না
তুমিই প্রতীক বুঝি এই পৃথিবীর
আবার কখনও ভাবি অপার্থিবা কিনা

সারাদিন পৃথিবীকে সূর্যের মতন
দুপুরদগ্ধ পায়ে করি পরিক্রমা,
তারপর সায়াহ্নের মতো বিস্মরণ-
জীবনকে স্থির জানি করে দেবে ক্ষমা

তোমার শরীরে তুমি গেঁথে রাখো গান
রাত্রিকে করেছো তাই ঝঙ্কারমুখর
তোমার সান্নিধ্যের অপরূপ ঘ্রাণ
অজান্তে জীবনে রাখে জয়ের স্বাক্ষর

যা কিছু বলেছি আমি মধুর অস্ফুটে
অস্থির অবগাহনে তোমারি আলোকে
দিয়েছো উত্তর তার নব পত্রপুটে
বুদ্ধের মূর্তির মতো শান্ত দুই চোখে


ছেলেটা হারিয়ে গেলো
৩০ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ৯:২৮

ছেলেটা শান্ত হাতের মুঠোয় পৃথিবীর একগোছা ঘাস পেলেই
মাটি ও কাদার পেলবে নাকডাকা ঘুম
ডাহুকের গান, মগডালে বকছানাদের বাসা, নিঝুম দুপুরে নি:সঙ্গ ঘুঘুরা কাঁদে
ছেলেটা হারিয়ে যায় কোথায় কে জানে

ছেলেটার নাটাই আছে, বিরান রোদে বাঁশকাগজের ঢাউস ওড়ায়
ডাংগুলি আর দাঁড়িয়াবাঁধা, হা-ডু-ডু খেলে ছেলেটা
শিমুলফুলে মাথায় পাগড়ি বাঁধে
টইটুম্বুর খালে ও পুকুরে পুরোবেলা ডুবসাঁতার
ছেলেটা হারিয়ে যায়

আড়িয়াল বিলের সবুজ পাথার ছেলেটাকে বড্ড দিশেহারা করে
ছেলেটা হারিয়ে যায় কোথায় কে জানে

ছেলেটার মা নেই আমারও নেই যেমন
ছেলেটার একটা প্রিয় গাভি ছিল যেমন ছিল আমারও
ছেলেটার শান্ত শৈশব, কৈশোরের কচি দিনগুলো আমারও ছিল
ছেলেটা হারিয়ে গেলো কোথায় কে জানে

ছেলেটাকে এখন আমি প্রাণপণে খুঁজি সমগ্র শহরে, নগরে নগরে


নিষিদ্ধ নগরী

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:৫৬

শেয়ার করুন: Facebook







ইমপোটেন্স কমপ্লেক্সিটিতে ভুগতে ভুগতে একদা এক পুরুষ জনৈকা নারীর শরণাপন্ন হয়ে বললেন, 'ইমপোটেন্স কী, আমাকে বোঝাবে?'

তিনি তাঁকে কিছুদিন সাড়ম্বরে সংজ্ঞা বুঝিয়ে বিদায় জানাবার আগে বললেন, 'আবার এসো, তোমায় আমি প্রেম শেখাবো।'



প্রকাশ করা হয়েছে: কবিতা বিভাগে ।


  • ১০ টি মন্তব্য
  • ২৬৫ বার পঠিত,
আপনি রেটিং দিতে পারবেন না
পোস্টটি ২ জনের ভাল লেগেছে, ০ জনের ভাল লাগেনি
১. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:২৫
comment by: নামহীনা বলেছেন: সেইরম হইছে।

জট্টিল।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:১৯

লেখক বলেছেন: জানতাম =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~



২. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:১২
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:২৪

লেখক বলেছেন: =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~



৩. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:১৫
comment by: আমি ও আমরা বলেছেন: দারুন লাগলো। চমক আছে।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:৩৩

লেখক বলেছেন: ;) ;) ;) ;) :) :) :) :) :D :D



৪. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ২:৪২
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:২১

লেখক বলেছেন: জার বটে =p~ =p~ =p~ =p~



৫. ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৩:৫৬
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:০৭

লেখক বলেছেন: :P :-B :-B :( :( :( :(




যার জন্য ব্লগ লিখি

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৪২

শেয়ার করুন: Facebook

এ ভুবন অলখে ছিল; সোনালি চিরকুটে মানচিত্র এঁকে পথ দেখালি তুই
আমার ঘোর কাটে না, আড়ালে তোর মিটিমিটি হাসি
যেন এক অনুপম জয়
অনেকগুলো নিক রয়েছে তোর- বলেছিলি- অনেকেই সবগুলো জানে
আমাকে জানালি একটাই-

কী যে ছাই লিখি, আমারই প্রাণ ভরে না। আর তুই
একটা অর্থহীন পঙ্‌ক্তি অথবা ক্যাজুয়াল প্যারাগ্রাফ ছেড়ে দিলেই
কে কার আগে 'প্রেজেন্ট ম্যা'ম' বলে কুড়োবে তোর অমূল্য বাহবা
ব্লগসুদ্ধ পড়ে যায় হুড়োহুড়ি। কী যাদু জানিস তুই? কোন্‌ চৌম্বকার্ষ
তোর ভার্চুয়াল শরীর জুড়ে? ব্লগীয় মিডিয়ায়
দুরন্ত সেলিব্রেটি তুই- অদ্বিতীয়া- দূর থেকে তোকে দেখি, আর
ক্রমশ এক ইনফিরিয়র এ্যাটিচুড ঘন হতে থাকে মগজ-তন্তুতে
তবু ভালো লাগে, তোর সাথে আজও একটা সম্পর্ক রয়েছে আমার
আর মাঝে-মাঝেই ঘটে যায় 'হাই-হ্যালো' এক্সচেঞ্জ অব উইশেজ

স্বনামে আজও এলি না আমার এ পাড়ায়। তোর একটা কমেন্টের জন্য
কতোটা বুভুক্ষাপীড়িত আমি, বুঝলি না...
কতো কতো অজানা অচেনা ব্লগার
ঘুরে যায় আমার আঙিনা প্রতিদিন- হয়তো তুই- এ ভেবে দ্রুত
ঘুরে আসি ওদের ঘরবাড়ি- তোর জন্য উড়িয়ে দেয়া মোক্ষম একটা মেসেজ
এ বেলা পড়ে গেছিস, এ ভেবে অফুরন্ত প্রসাদে বিভোর হয়েছি কতোদিন
নাহ্‌- তোকে আমি চিনি- তোর রং, তোর আঁকিবুকি, তোর ভালো লাগা, তোর রুচি
আর তোর মন আমি চিনি- তোর মতো মেলে না কোথাও

কী এমন হতো ক্ষতি, আগুনের ফুলকির মতো ছোট্ট একটা কমেন্ট ফেলে গেলে
আমার কিছু গরীব লেখায়? বারুদের মতো তোর কমেন্ট বিস্ফোরিত হতে দেখি
অন্যদের ব্লগে; আমার বুকের ভেতর ফুঁসতে থাকে অগ্নিবর্ষী সাপ

তোর জন্য ব্লগ জুড়ে সবগুলো কথা উলট পালট ফেলে রাখি, একদিন
ঘুম থেকে জেগে সহসা স্বনামে ভ্রমবশে ঢুকে পড়বি আমার এ ব্লগে
আর সবগুলো শব্দ সাজিয়ে নিবি
আর বুঝে নিবি কতোটা রাত তীব্র জেগে থাকি- ভেসে ভেসে এসে
আমার দরজায় আলগোছে টোকা দিবি, এ আশায়

আমার কিছুই হলো না- প্রেম কিংবা কবিতা
কিছু শব্দ ছুরির মতো ছুঁড়ে মারি তোর বুক বরাবর
আহা, বড্ড নপুংশক- পানি, রংহীন, তরল- ঘায়েল করতে শেখে নি আজও



**পরিমার্জিত ও রিপোস্টেড

প্রকাশ করা হয়েছে: কবিতা, রম্য বিভাগে । সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৪৩


  • ১৮ টি মন্তব্য
  • ১২৯ বার পঠিত,
আপনি রেটিং দিতে পারবেন না
পোস্টটি ৫ জনের ভাল লেগেছে, ০ জনের ভাল লাগেনি
১. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৪৩
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৪৬

লেখক বলেছেন: সংকেতগুলো বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ:):)



২. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৫৫
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৫৭

লেখক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।



৩. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:০০
comment by: চতুষ্কোণ বলেছেন: ব্লগে সেলিব্রেটি, নন সেলিব্রেটি ফাউল একটা ব্যাপার বলেই মনে হয়। বেশী বেশী কমেন্ট পড়লেই সে সেলিব্রেটি এইটাতো আরও হাস্যকর।

লেখাটা খুব ভালো লাগল । প্রিয়তে...

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:২২

লেখক বলেছেন: আপনার সাথে একমত না হয়ে উপায় নেই। সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ।



৪. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:০০
comment by: নম্রতা বলেছেন: কতো কতো অজানা অচেনা ব্লগার -------আমি তাদেরই একজন !
যাকে নিয়ে আপনার এত ভাবনা -----তার জন্যে শুভকামনা !

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:২৪

লেখক বলেছেন: আপনিই তাহলে সেই দরদিয়া? আমারও তাই মনে হয়েছিল, অনেকদিন থেকেই:):):)
যাক, অসংখ্য ধন্যবাদ ঢুঁ মারার জন্য:):)



৫. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:০৯
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:২৪

লেখক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।



৬. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:১৩
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:২৫

লেখক বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।



৭. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৭
comment by: লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: ভাল লেগেছে কবি
ভাল থাকবেন

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:১৩

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ কবি। আপনিও ভালো থাকুন।



৮. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৯
০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:২৬

লেখক বলেছেন: আপনার অবস্থা কি আমার মতোই:(:(



ঠাট্টা:):)



৯. ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৩৫
comment by: রাতমজুর বলেছেন:
আমি লিখতে পারি যে কমেন্টের আশা করুম?
অট: খোমা দেখান নাই, মাইনাস দিবার মনচায় ;)

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৪৪

লেখক বলেছেন: আপনার পোস্টে তো ভুরি ভুরি কমেন্ট:):):)


অট : খোমা বুঝি নাই।

যাই হোক, একটা মাইনাস দিয়ে মনের আশা পূরণ করেন:):)




একজোড়া যুবকযুবতী উপযুক্ত স্থান না পেয়ে

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১:৫৬

শেয়ার করুন: Facebook


অতি সরল ও পবিত্র দুই যুবকযুবতী হঠাৎ প্রেমে পড়ে গেলো, আর তারা পাপ করতে প্রাণান্ত হয়ে উঠলো।

অতি সরল মানে বোকা, যে কোনোদিন উপযুক্ত স্থান খুঁজে পায় না। অতি পবিত্র বলা যায় তাকে, যার গাত্র অদ্যাবধি সঙ্গমের স্বাদ পায় নি, অথচ বহ্নিমান শরীরে ইচ্ছেরা টগবগে

যুগলেরা সুনিবিড় স্থান খোঁজে- বাড়ির ছাঁদে, সেখানে দিনভর হৈচৈ
জঙ্গল খোঁজে, বিরান শহরে জঙ্গল কোথাও কি আছে?
পার্কে যেতে হলে যতোটুকু চাতুর্য্যের প্রয়োজন, ওদের তা নেই
ওরা 'প্রসিদ্ধ' হোটেলে যাওয়ার কথা ভেবেছিল কিছুদিন। যে হারে পুলিশের হানা পড়ে আজকাল, হাতকড়া সমেত পত্রিকার পাতায় বিমর্ষ ও লজ্জিত ছবির কথা ভাবতেই ভয়ে শিউরে উঠেছিল গা।

ট্রেনের কামড়ায়, স্টিমারের কেবিনে, .... কোথাও একটা পোড়ো বাড়ি যদি মিলে যেতো! সুবিশাল বাড়িটা একদিন জনশূন্য হয়ে যেতো যদি, ওরা বিলকুল ঘটিয়ে ফেলতো পাপ- কৃতার্থ পাপীর মতো

শেষমেষ সেই কাজটাই করতে হলো : রণে ভঙ্গ।


কিছু একটা ক্ষতি তো হলোই, লাভ হলো অনেক বেশি
ওরা রয়ে গেলো আবাল্য সরল, আর আশরীর অপঙ্কিল

প্রকাশ করা হয়েছে: কবিতা, রম্য বিভাগে ।


  • ৪৪ টি মন্তব্য
  • ৭৬৬ বার পঠিত,
আপনি রেটিং দিতে পারবেন না
পোস্টটি ২১ জনের ভাল লেগেছে, ১ জনের ভাল লাগেনি
১. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:০৩
comment by: তায়েফ আহমাদ বলেছেন: কাহিনী কিছুই ধরতে পার্লাম্না!
:|

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:১০

লেখক বলেছেন:
কাহিনী? কিছু একটা তো আছেই-

'একটি ছোট্ট ছেলে, আর একটি ছোট্ট মেয়ে,
ওরা ধরা পড়েছিল হায় পেয়ারা চুরি করে'...

;);););)



২. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:০৬
১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:১২

লেখক বলেছেন: অতি সরল ও পবিত্র দুই যুবকযুবতী হঠাৎ প্রেমে পড়ে গেলো, আর তারা পাপ করতে প্রাণান্ত হয়ে উঠলো।

ঘটনা এর বেশি ঘটতে পেরেছে? ;);););)



৩. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:০৮
comment by: অলস ছেলে বলেছেন: তীব্র দিক্কার। প্রাকৃতিক চাহিদা পুরণ করলেই পঙ্কিল হয়ে যায়, এমুন নারী থুক্কু লিঙ্গ থুক্কু জেন্ডার বিদ্বেষী প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা থেকে বেরুতে পারলো না মানুষ। আফসুস। তবে কি আন্ধারেই ছেয়ে থাকবে চারপাশ???

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:১৫

লেখক বলেছেন: সহমত! সহমত!! সহমত!!!

আমারও খুব আফসোস হচ্ছে হে;);););)



৪. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:০৮
comment by: স্বপ্নকথক বলেছেন: সায়ম মুন বলেছেন: ঘটনা কিতা :)

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:১৬

লেখক বলেছেন: ঘটনা আর কিছুই না, যা বলেছি ওটুকুই;););););)



৫. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:১৩
comment by: শামীমস বলেছেন: ভালো পোস্ট। প্রেমিক প্রেমিকার সমস্যাগুলোর সমসাময়িক পোস্ট। .........ভোক্তভোগীটা কে? আপনি???? :D :D

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:১৮

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ। আমি তো আপনাদেরই মুখপাত্র, তাই না? আপনাদের সমস্যাই আমার নিজের সমস্যা বলে মনে করি;););););)



৬. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:২০
comment by: ত্রিমাত্রিক বলেছেন: ছোডবেলার কতা নাকি :D

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:২৩

লেখক বলেছেন: =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~



৭. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:২১
comment by: ভূতুম প্যাঁচা বলেছেন: ভালো পোস্ট। প্রেমিক প্রেমিকার সমস্যাগুলোর সমসাময়িক পোস্ট ।তবে আজকালকার ছেলেমেয়েরা স্হান ঠিকই খুজে পেয়ে যায় ।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:২৬

লেখক বলেছেন: তবে আজকালকার ছেলেমেয়েরা স্হান ঠিকই খুজে পেয়ে যায়। আমি আর কী এদের কথা বলছিলাম না, বলছিলাম অতি সরল আর পবিত্রদের কথা (ডেফিনিশন দেখুন ২য় প্যারায়), যারা পায় না। ফলে ওরা টক আঙ্গুর ফলের জন্য আফসোস করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে না;););)



৮. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:২৪
comment by: এরং অথবা আমি বলেছেন: ভাইরে বড় হইলাম বিয়ার বয়ষ পার হইতে লাগলো অথচ আপনার গল্পের মত বাসনা এখনো অতিবাহিত করছি।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:২৭

লেখক বলেছেন: খুব ভালো লাগলো জেনে। দোয়া করি, আপনার পরিণতি এ গল্পের মতোই যেন হয়। আমিন।



৯. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:২৪
১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:২৭

লেখক বলেছেন: ব্যাপারনা;)



১০. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:৩৯
comment by: অন্ধ আগন্তুক বলেছেন: তাহারা স্বপ্ন যাহা খুসি তাহাই করিতে পারে...............সেটাই চলুক =p~ =p~ ;)

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:১৮

লেখক বলেছেন: সেটাই চলুক তাহলে:):):)



১১. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:৫২
comment by: এরশাদ বাদশা বলেছেন: দুইটা সোমত্ত জোয়ান পুলা-মাইয়া পিরিতির ফাঁন্দে আটকা পইড়লো। পিরিতির রীতি মোতাবেক শরীর গরম হইলো, আর তারা গরম নিবারনের জন্য জায়গা খুঁজিতে লাগিলো..অবশেষে কোনমতো কাম সারা হইলো।

এইডাই..যারা বুজেন নাই,তাগো লাইগা.. :-P

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:১৯

লেখক বলেছেন: বাহ্‌, দারুণ একটা গল্প লিখে ফেলেছেন তো! অভিনন্দন গ্রহণ করুন:):)



১২. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ৮:০৬
১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:১৯

লেখক বলেছেন: আহা! আহা!!



১৩. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ৮:৩৬
comment by: নীলতারা বলেছেন: যুবক যুবতীযোগল কি ভাইয়ের জানাশোনায়..?

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:২০

লেখক বলেছেন: বিশ্বাস হচ্ছে না?:):):)



১৪. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ৯:৫৪
comment by: মুখ ও মুখোশ বলেছেন: এলোমেলো কথাবার্তা কিন্তু অধিকাংশ যুগলের (লেখকের নিজেরও হতে পারে-ডোন্ট মাইন্ড) মন বাসনার বহিপ্রকাশ। মার্জিত ভাবে প্রকাশ করতে পারার জন্য +

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৯

লেখক বলেছেন: হাহ হাহ হাহ:):):) খাসা বলেছেন মুওমু:):) +এর জন্য ধন্যবাদ।



১৫. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:৩৫
১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৯

লেখক বলেছেন: :-B



১৬. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:৫১
comment by: যীশূ বলেছেন: তেমন কিছু হয় নাই।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১২

লেখক বলেছেন: হ্যাঁ তাইতো, কিছু হয়েছে নাকি? ;););)



১৭. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:৫৪
comment by: লালসালু বলেছেন: এয়ারপোর্টের পাশের কাওলায় বিমান অফিসের পাশে একটা সুন্দর নিরিবিলি :P পার্ক আছে। সেইখানে গেলে লাভ হইত।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৩

লেখক বলেছেন: হোয়াট এ সিক্রেট! কাউকে তাহলে বোকা থাকতে দেবেন না?;););)



১৮. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৩০
comment by: জনৈক আরাফাত বলেছেন: উত্তরাধুনিক গপ্পো ভালো লাগল!

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৪

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ। কিন্তু আমিতো এটাকে সনেট হিসেবে চালাতে চাইছিলাম;);)



১৯. ১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:১২
comment by: হুলো-বেড়াল বলেছেন: তায়েফ আহমাদ বলেছেন: কাহিনী কিছুই ধরতে পার্লাম্না!

১০ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৯

লেখক বলেছেন: লেখকও আগের কথাই বলেছেন;);)



২০. ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ ভোর ৫:৩৪
comment by: সিষ্টেম ইন্জিনিয়ার বলেছেন: কুথায়ও জায়গা না পেয়ে তার ঝাল এইরকম মার্জিত ভাষায় ঝাড়ার জইন্য পিলাস (+) ;) :D
@ ব্লগারবৃন্দ কেউ লিটনের ফ্লাটের সন্ধান উনারে দেন। উনাকে পাপ- কৃতার্থ পাপী হওয়ার সুযোগ দিন :) :P

১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৩

লেখক বলেছেন: লিটন কে? তিনি কি অনেক ফ্লাটের মালিক? থাক, কিনবার টাকা নাই:(



২১. ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ ভোর ৬:০২
১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৪

লেখক বলেছেন: বুকটা ফাইট্টা যায়?:(:(:(



২২. ১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ ভোর ৬:২৪
১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৪

লেখক বলেছেন: ):):):);););)





১৯৭১ - আমার যুদ্ধে না যাবার কথা

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:৪২

শেয়ার করুন: Facebook


আঠার বছর বয়স,
কিংবা যে বয়সে যুদ্ধে নামে যুবকেরা, আমার তা ছিল না একাত্তরে
আমার ছিল
রঙিন ঢাউস, ডুবসাঁতার, গেছোমেছো, চড়ুইভাতি আর বেতজঙ্গলে
ঘোড়াঘাপটি খেলা দুরন্ত দুপুর
আমার ছিল
বাবার কাঁধে চড়ে পৌষসংক্রান্তিতে নূরপুরের মাঠে তুমুল ঘোড়দৌড় দেখা
আমার ছিল
শীতের ধামাইল, শানাল ফকিরের ওরস, না-বোঝা জারিসারি গান রাতভর

আমার একটা বিশাল যুদ্ধদল ছিল, অঙ্গুলি দর্শনে
আলের পর আল মাড়িয়ে ওরা ছুটে আসতো মাষকলাই পোড়ানোর মাঠে;
আমার যুদ্ধদল- চোখের ইশারায় পরনের গামছা
কিংবা লুঙ্গি একটানে ছুঁড়ে ফেলে দল্লে গাছের শাখা হতে ঝাঁকে ঝাঁকে
দিগম্বর লাফিয়ে পড়তো খালের পানিতে;
আমার যোদ্ধারা অমায়িক আর খুব বিশ্বস্ত ও বাধ্যগত ছিল; আমার অধীনে

আমার আড়িয়াল বিল ছিল,
বাহারি কচুরি ফুল, কার্তিকের ভোরে ঠেলাজালে চিংড়িপোনা-
গাবানো টেংরাপুঁটি আর টাটকিনির খলবলানিতে সকাল-দুপুর মত্তবেলা

আমার ভেলানৌকো ছিল, আর বাবার ছিল ছোট্ট ডিঙিনৌকো।
অনেক দুপুর সাঙ্গপাঙ্গদের লয়ে ভান করে ঘুমিয়েছি ভেলা আর নৌকোর পাটাতনে। আমাদের জলমান আমনক্ষেতে ভেসে থাকা লাশগুলো
কলার ভেলা আর ডিঙিনৌকোয় ঠেলে প্রতিদিন স্রোতের পানিতে ভাসিয়ে দিতেন বাবা। বাবার চোখ ছিল রুক্ষ ও অস্থির; আমি তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী ছিলাম।

আমার চাচা গ্রাম ছেড়ে চলে গেলেন। আমার চাচী কাঁদেন।
আমার দাদী কাঁদেন।
আমার বাবা ও চাচাতো ভাইবোনেরা কাঁদেন।
চাচা আমাকে কত্তো আদর করতেন; চাচাকে না পেয়ে আমিও কাঁদতাম;
কতোদিন গোপনে।
আমার চাচা যেদিন যুদ্ধ থেকে ফিরে এলেন
১৬ ডিসেম্বরের পর কোনো এক উজ্জ্বল সায়াহ্নে- কী ভীষণ কান্নার রোল, আর হৈচৈ-
চাচা আর বেঁচে নেই, এই ভেবে কতো আগে আমরা মনকে পাষাণ করেছিলাম।

চাচার গল্পমুখর সন্ধ্যা ছিল; আমার ছিল অবিরাম আক্ষেপ- চাচার মতো
যুদ্ধ না করতে পারার দুঃখ

আমার একটা গান ছিল, সমগ্র কৈশোরে প্রথম বোধন-
চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস
আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি
আমার একটা পতাকা ছিল- কাড়ালের মাথায় ছেঁড়া একটি শার্ট বেঁধে ভোঁ ভোঁ উড়িয়েছিলাম উড়ন্ত মিছিলের পথে, টগবগে ময়দানে

এসব আমি কিছুই বুঝি নি কোনোদিন;
শুধু টের পেতাম, বুকের ভেতর ক্রমশ গজিয়ে উঠছে অনিবার্য ঘাস, সবুজ সবুজ কচি পাতা; স্বপ্নের মতো তুলতুলে বাংলাদেশ




*রিপোস্টেড

প্রকাশ করা হয়েছে: কবিতা বিভাগে ।


  • ৮ টি মন্তব্য
  • ৭৭ বার পঠিত,
আপনি রেটিং দিতে পারবেন না
পোস্টটি ২ জনের ভাল লেগেছে, ০ জনের ভাল লাগেনি
১. ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:৪৭
comment by: হাসনাত মো: আদনান বলেছেন: খুব ভাল লাগলো লেখাটি । শব্দ-চয়ন দারুন ।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ২:৫৪

লেখক বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ব্লগে স্বাগতম।



২. ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ ভোর ৪:১০
comment by: আশরাফ মাহমুদ বলেছেন: ভালো লাগল।

========================

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:০০

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ। অনেকদিন পর! 'এতোদিন কোথায় ছিলেন?':):)



৩. ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ৭:৫৭
comment by: সীমানা ছাড়িয়ে বলেছেন: যুদ্ধে যান নাই দেইখা মাইনাচ দিতে মঞ্ছায়

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:০১

লেখক বলেছেন: সগৌরবে মাইনাস দিতে থাকুন:)



৪. ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ ভোর ৫:০০
comment by: রাকিবুল হক ইবন বলেছেন: আপনিও সযত্নে সুন্দরভাবে সৃষ্টিমুখর ...

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:৩৯

লেখক বলেছেন: আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ কবি।



বর্ণনায় নারী ও পুরুষ

২০ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:২২

শেয়ার করুন: Facebook

পুরুষের বর্ণনায় নারীর সুন্দরীত্ব, যৌনাবেদনময়তা ফুটে ওঠে। ভিঞ্চি বা ফিদা হোসেনের নারীশিল্পকে দেখে বলে উঠি : বাহ্‌, কি শিল্পিত হাসি, স্নিগ্ধ চোখ! একজন পুরুষলেখক বা কবি 'স্ত্রী'লিঙ্গ, যুগল স্তন আর ভাঁজখোলা শরীরের নিখুঁত বর্ণনায় বরাবরই সোচ্চার ও পারদর্শী।

স্ত্রীরা পুরুষের মধ্যে কী খোঁজেন? তাঁদের বর্ণনায় পুরুষের প্রশস্ত বাহু, সাবলীল হাত, উন্নত শির এবং সুদৃঢ় ব্যক্তিত্বের প্রকাশই দেখতে পাই, যুগে যুগে। যদিও কেউ কেউ মৈথুনমত্ততা ও সম্ভোগে বিপুল তৃপ্তি বা অতৃপ্তির কথা সগর্বে স্বীকার করেছেন, লালসায় দেশান্তরিও হয়েছেন, তাঁদের লেখায় পুংযন্ত্রের সরস বর্ণনা সম্ভবত দেখা যায় নি;

তাহলে ব্যাপারটা কী দাঁড়ালো! পুরুষরা নারীদের লাবণ্যপিয়াসী; নারীরা সৌন্দর্য আর যৌনতার প্রতীক; পক্ষান্তরে, নারীরা একজন পুরুষের মধ্যে পৌরুষ আর ব্যক্তিত্ব খোঁজেন; নির্দ্বিধায় বলি, কাঠিন্যই পুরুষত্ব।

প্রকাশ করা হয়েছে: কবিতা বিভাগে । সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:২২


  • ১২ টি মন্তব্য
  • ২১০ বার পঠিত,
আপনি রেটিং দিতে পারবেন না
পোস্টটি ৩ জনের ভাল লেগেছে, ১ জনের ভাল লাগেনি
১. ২০ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৩৪
comment by: গরম কফি বলেছেন: নারীরা আগে দেখে টেকা তার পরে দেখে টেকা তারপর জানতে চায় কয় ইন্চি লম্বা । তবে সবাই এক রকম নয় কিছুটা ব্যতিক্রম ও আছে ।

২০ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৩৭

লেখক বলেছেন: কফিটা খুব গরম রে ভাই:):)



২. ২০ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৩৯
comment by: হতবুদ্ধি বলেছেন: তসলিমা নাসরিনকে জিজ্ঞাসা করে দেখা যাইতে পারে। ভাল বর্ণনা/ফলাফল পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই "নাম্বার অব স্যাম্পলস" বাড়াতে হবে। আমি অবশ্য শুনেছি মেয়েরা ছেলেদের জিপারের দিকে আগে তাকায়। B-) ;)

২১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:১৫

লেখক বলেছেন: ছেলেরা আগে কোন্‌ দিকে তাকায় সেটা আমি জানি; তাই নিশ্চিত বলা যায় ছেলেরা যেদিকে যেভাবে তাকায় তাই বর্ণনা করে:) মেয়েরা কি ছেলেদের মতো বর্ণনা করে? এ মুহূর্তে নির্মলেন্দু গুণের 'স্ত্রী' পড়তে ইচ্ছে করছে। তসলিমা নাসরিন কি তাঁর মতো 'পুরুষাঙ্গ' দেখতে চেয়ে বা এর বর্ণনা দিয়ে কোনো কিছু লিখেছেন? অন্তত 'ক'তেও তা নেই, যাকে অনেকে বিখ্যাত চটি-সাহিত্যও বলে থাকেন:)

যাই হোক, আপনার জ্ঞানগর্ভ মন্তব্যগুলো ভালো লাগছে:):)



৩. ২০ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৪৭
comment by: ধ্রুব তারা বলেছেন: সুন্দরীত্ব শব্দটা প্রথম শুনলাম

২১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:১৬

লেখক বলেছেন: নেভার মাইন্ড, এটা আমার কাছেও নতুন, আনকোরা, সদ্যোজাত:)



৪. ২০ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১১:৫০
২১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৩২

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ:)



৫. ২১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:০৩
comment by: স্বদেশ সিনহা বলেছেন: ভাই আমি একটু অন্য রকম জানি...........
মেয়েদের নাকি হার্ট অ্যাটাক হয় না । ছেলেরা ব্যাঙ্গ করে বলে ওদের হার্টই নেই, তো হার্ট অ্যাটাক হবে কি করে। আর মেয়েরা বলে তারা তাদের হৃদয় তার ভালোবাসার মানুষকে দিয়ে দায়, যা ছেলেরা পারে না।
?????? আমি কনফিউজ্ড ?????

Click This Link
মাইন্ড নিবেন না।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৩৪

লেখক বলেছেন: আপনি ঠিকই জানেন। মেয়েরা তাদের হার্ট ছেলেদেরকে দিয়ে দেয়, ফলে হয় কী, ছেলেরা দুটো হার্ট নিয়ে বিপাকে পড়ে যায়- একসঙ্গে দুটো হার্ট সামলানো চাট্টিখানি কথা না, অতএব ছেলেদের হার্ট ফেল মারে। আর মেয়েরা তো তাদের হার্ট ছেলেদেরকে দিয়েই খালাস:):)



৬. ২১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৫৬
comment by: মৃত৬৬৬ বলেছেন: এতো বিশাল একটা বিষয়ের ক্ষুদ্র একটা অংশ নিয়ে গেজাইলেন।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১:০৮

লেখক বলেছেন: বাকি অংশগুলো নিয়া সবাই আগেই গেজাইয়া গেছে:):)





মনে রাখে নি
০১ লা জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:৩১

মনে রাখে নি
পউষের শেষে প্রথম পাতারা ঝরে যায় যেমনি, তেমনি সরে গেছে পুরনো বন্ধুরা
নতুন বছরের আগের রাতে
ওরা কতো সুগন্ধি ছড়াতো, হর্ষনদীর ফোয়ারা ফোটাতো
শংসাকাহিনী শোনাতো মুখর সকালদুপুরে
তারপর হেসেখেলে যেতে যেতে বলেছে কেবল ওদের কথাই

আমার কথাটি মনেও পড়ে নি

আমার কথাটি মনেও পড়ে নি


একটা জরুরি খবর
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:৪৫

জরুরি খবরটা হলো :
আমি একটা প্রেম চাই
যে প্রেমের কোনো সংজ্ঞা জানে না মানুষ

আমার ই-মেইল ঠিকানা, সেল নাম্বার
বাসায় পৌঁছবার নিখুঁত ল্যান্ডমার্ক এঁকে রাখলাম
দেয়ালে দেয়ালে

সিনসিয়ারলি বলছি, আমি একটা প্রেম চাই


কেউ কি আছেন?

প্রকাশ করা হয়েছে: কবিতা বিভাগে । সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ২:১০


  • ৩৬ টি মন্তব্য
  • ২১৬ বার পঠিত,
আপনি রেটিং দিতে পারবেন না
পোস্টটি ১ জনের ভাল লেগেছে, ১ জনের ভাল লাগেনি
১. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:৪৬
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:৪৮

লেখক বলেছেন: হ্যাপি নিউ ইয়ার:)



২. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:৫১
comment by: আলুমিয়া বলেছেন: আগে এইটা একটু চেখে দেখতে পারেন।
Click This Link

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৮:১৫

লেখক বলেছেন: দেখে এলাম :):):)



৩. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:৫৪
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৮:১৫

লেখক বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।



৪. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:৫৫
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৮:১৫

লেখক বলেছেন: আসুন, হাত মেলাই:):)



৫. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:৫৭
comment by: হতবুদ্ধি বলেছেন: অনেক দিন ধইরা আমিও খুঁজতেছি, পাইলে জানাইয়েন। আমারও লাগবে।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৮:১৬

লেখক বলেছেন: লাইনে দাঁড়ান ভাই:):)



৬. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৮:১৮
comment by: সাঈফ শেরিফ বলেছেন: পরিমাণমত ফান্ডিং নিয়ে আসুন, সাথে বড় আফুদের কাছ তেকে পাওয়া তিন খানা প্রশংসা পত্র। চেলেকে রুমান্টিক হুতে হবে, পর্যাপ্ত ফান্ডিং তাকতে হবে, লম্বু হতে হবে, বিয়ে করার স্ট্রং মুটিভেশন তাকতে হবে, ক্যারিয়ার (এইটা কিন্তু টিফিন ক্যারিয়ার না) ভালু হতে হবে। আমরা দালাল ওরফে ম্যাচ মেকাররা অফ লাইনে আচি। স্ট্যাপ প‌্যাডে ফান্ডিং, প্রশংসা পত্র আর পাসপুর্ট সাইজ সিভি সহকারে যুগাযুগ করুন। বিফলে দ্বিগুণ মূল্য ফেরত।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৮:২২

লেখক বলেছেন: সবকিছুর নিশ্চয়তা দিলাম। আমার অসংজ্ঞায়িত প্রেমের নিশ্চয়তা দিন এবার:):)



৭. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৮:২৬
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:৪৬

লেখক বলেছেন: ?



০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:০৯

লেখক বলেছেন: Click This Link



৯. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:০১
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:১০

লেখক বলেছেন: আর বলতে:)



১০. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:১৩
comment by: রুমমা বলেছেন: এইভাবে ব্লগে খুজে কি আর মেয়ে পাবেন,যখন পাবেন এমনিই পাবেন।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:১২

লেখক বলেছেন: আমি মেয়ে খুঁজছি কিভাবে বুঝলেন? :):)



১১. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:২৮
comment by: ব্যঞ্জনবর্ন বলেছেন:
"প্রমিকাহীন পথ চলুন
শান্তি ও সমৃদ্ধির মুখ দেখুন ।"

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:৪৩

লেখক বলেছেন:
এমন একটা প্রেম চাই
যা আজও মানুষের মগজে আসে নাই
এমন অলৌকিক প্রেম কোথায় গেলে পাই!



১২. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:৩৫
comment by: গুরুজী বলেছেন: কুনু ছেলের সাথে নাকি মেয়ের সাথে!! ;)

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:৪৫

লেখক বলেছেন: আপনি বোঝেন নি গুরুজি, কী ধন আমি কামনা করেছি!



১৩. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:৪২
comment by: আবু সালেহ বলেছেন:
সকাল বেলার হট নিউজ.....
ফারিহান ভাই....নতুন বছরে নতুন কিছু করতে চায়.... :P :P :P :P :P

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:৪৭

লেখক বলেছেন: জি ভাই, কিছু একটা তো করে খেতে হবে, তাই না? তো প্রেমই না হয় করি!



১৪. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:৪৮
comment by: আঁতেল বলেছেন: ভাই একখান পরামর্শ দেই। কিছু মনে লইয়েন না। প্রেম পিরিতি করে জীবনডা শেষ করে ফালাইয়েন না। প্রেম যে কি জিনিস তা আমি জানি। প্রেম করে আজ আমি নিঃস্ব। টাকা পয়সার হিসাব না হয় বাদই দিলাম। :(( :(( :(( :(( :(( :((

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:০৪

লেখক বলেছেন: মনের কথা কেউ বুঝলো না:(



১৫. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১:৪০
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:০৬

লেখক বলেছেন: আজব তো:)



১৬. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৪:৩১
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:০৭

লেখক বলেছেন: ভাবী আছেন বহাল তবিয়তেই:)



১৭. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:২০
comment by: শয়তান বলেছেন: কৈলাম এই বয়সে এসব কি :P

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:০৯

লেখক বলেছেন: 'এসব' কী জিনিস? এসবের কি বয়স থাকতেই হবে?



১৮. ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:১৮
comment by: শয়তান বলেছেন: তাইলে সাবধানতা অবলম্বন কৈরেন বেশী

রঙ নাম্বারে মিস্কল গেলে খপরাছে :-B

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:৩০

লেখক বলেছেন: সাবধানের মার নাই। উপদেশের জন্য ধন্যবাদ।






সন্ন্যাসী
০৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৩:৪৩

একদিগন্ত ঝড় মুঠোয় পুরে ছুটছে সন্ন্যাসী

সম্মুখে অগৃহের বিভা, পেছনে শূন্য ছায়া
ভুলেছে সঙ্গমের স্বাদ, অস্তিত্বের মায়া, বুকে তার
উথালপাথাল সাগরের জলরাশি

ছুটছে রাশভারি, অকাতর সন্ন্যাসী

প্রকাশ করা হয়েছে: কবিতা বিভাগে ।


  • ১০ টি মন্তব্য
  • ৬৬ বার পঠিত,
আপনি রেটিং দিতে পারবেন না
পোস্টটি ৪ জনের ভাল লেগেছে, ০ জনের ভাল লাগেনি
১. ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৩:৫৯
comment by: আবু মকসুদ বলেছেন:
সন্ন্যাসী! মায়াতো কাঠাতেই হবে...


বেশ কবিতা!

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:০৯

লেখক বলেছেন: 'বেশ কবিতা'র জন্য অনেক ধন্যবাদ। কবিতা সংকলনের জন্য আপনার ভালো লেগেছে, ব্লগ থেকে এমন কিছু কবিতার লিংক দিয়ে হেল্‌প করলে খুব উপকৃত হবো।



২. ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ ভোর ৪:২২
comment by: পাপী ০০৭ বলেছেন: ভুলেছে সঙ্গমের স্বাদ, অস্তিত্বের মায়া


ছুটছে সন্ন্যাসী

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:১০

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ। সংকলনের জন্য কবিতা পাঠাবেন আশা করি।



৩. ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:৩০
comment by: কাজল রশীদ বলেছেন:
স্যার, আমার ব্লগ থেকে আপনার ভালো লাগা কবিতা নিয়ে নিবেন।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:১৪

লেখক বলেছেন: প্রিয় কবি, আমার জন্য কাজটা সহজ হতো যদি কবিতার নাম বা লিংক উল্লেখ করতেন। আশায় থাকলাম।

একই সাথে, আপনার ভালোলাগা অন্য কবিদের কবিতার লিংক দিলে উপকৃত হই।



৪. ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:২০
১০ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ২:১৩

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ। আরও চাই। অন্যদের কবিতার লিংক দিলে উপকৃত হই।



৫. ১০ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:২৮
comment by: ফকির ইলিয়াস বলেছেন: কবিবর,
আপনাকে কবিতা ইমেইল করেছি আপনার
ইয়াহু আই ডি-তে ।

পেলে আমাকে ইমেইল করবেন প্লিজ।
ভালো থাকুন ।

১০ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:৫৯

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ ইলিয়াস ভাই, পেয়েছি।




কৃষ্ণকলি, আমি তোরেই খুঁজি
১১ ই জানুয়ারি, ২০১০ ভোর ৪:৪৪

(আকাশে একটি মেয়েকে ভাসতে দেখে)

মেয়েটা কালো, আর তাকে দেখেই মনে হলো
সে তোর মতো নয়- অবিকল তোরই ছবি যেন
অন্ধকারের ভাঁজে ভাঁজে খাঁজকাটা পুরোটা জমিন
প্লাবনে বিছানো শোক, জীর্ণ, মলিন
তার ডাগর চাহনির প্রকাণ্ড গভীরে
সমগ্র অতীত জাগালো ভোর
তারপর আরও গভীরে ঢুকে দেখি, কেউ নেই, শূন্য গৃহ তোর

প্রকাশ করা হয়েছে: কবিতা বিভাগে । সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৭:৪৪


  • ১০ টি মন্তব্য
  • ১০২ বার পঠিত,
আপনি রেটিং দিতে পারবেন না
পোস্টটি ৩ জনের ভাল লেগেছে, ১ জনের ভাল লাগেনি
১. ১১ ই জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:৩৬
comment by: তাজা কলম বলেছেন: তোর ডাগর চাহনির প্রকাণ্ড গভীরে
সমগ্র অতীত জাগালো ভোর
তারপর আরও গভীরে ঢুকে দেখি, কেউ নেই, শূন্য গৃহ তোর

++++ ভাল লাগল।

১২ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৩:০৪

লেখক বলেছেন:
মেয়েটা কালো- ছবিটা দেখেই মনে হলো
সে তার মতো নয়, অবিকল তারই ছবি যেন:)



২. ১১ ই জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৫:৫৯
১২ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৩:২৪

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ:)



৩. ১২ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:১০
comment by: সবাক বলেছেন:
অফটপিক :
কবিতা পেয়েছেন? পাঠালামতো। আওয়াজ নাই যে!!

১২ ই জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:৪১

লেখক বলেছেন: জবাব দিয়েছি, আপনার প্রতি-জবাব কই?



৪. ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১২:২৮
comment by: আবু সালেহ বলেছেন: তার ডাগর চাহনির প্রকাণ্ড গভীরে
সমগ্র অতীত জাগালো ভোর
তারপর আরও গভীরে ঢুকে দেখি, কেউ নেই, শূন্য গৃহ তোর...



১৫ ই জানুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:১৭

লেখক বলেছেন: কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি...



৫. ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৪:৫৯
comment by: ফয়েজ ০৮ বলেছেন: দারুন লাগলো......

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৫:২১

লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।



হাসির মূল্য
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ১২:০৮

সে কি কখনও হাসতে পারে
অল্প বয়সে যে নারীর স্বামী খুন হয়ে গেছে?

কবিতার বিবর্তন

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:১৯

শেয়ার করুন: Facebook

সর্বশেষ সংস্করণ : অয়োময় সুপুরুষ

কিছুই নেবে না সে। তার কোনও লোভ নেই।
তার কোনও আবেগ অথবা অনুভূতি নেই।

নিঝুম অন্ধকারে গা ঘেঁষে দাঁড়ালে তার শরীরও অন্ধকারময় নিরুত্তাপ
সে খেলে না আমায় নিয়ে যেমন তার অভ্যাস
আমার অঙ্গে অঙ্গে বিপুল মাৎসর্য্য দাহন
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করি তার সংসার
আমাকে সুখ দেয় অনিন্দ্য রহস্যের পরকীয়া পাপ

একটা ধারালো তরবারি তার চোখের সামনে খাপ থেকে খুলে
হাতে নেবো তুলে
আর তার নির্জন শয্যায় একটা আগুন শরীর বিছিয়ে দেবো
ভেবেছি কতোদিন

ও একটা বড্ড সুপুরুষ, সারাবেলা প্রেম দেয়
ও একটা বউপোষা কাপুরুষ, নিপাতনে সঙ্গম শেখে নি

ও এতো ভালো কেন?
ও এতো পাষণ্ড কেন, জানি না।

আমরা যাই লং ড্রাইভে, রিক্‌শায় সারা শহর
পার্কে, রেস্তরাঁয় ঘুরি; সিনেকমপ্লেক্সে মুভি দেখি
আলগোছে অন্ধকারে ওর হাতের আঙুল নাড়ি মুঠো ভরে
তারপর ব্লাউজের ভাঁজ গলিয়ে বুকের উপর ঠেঁসে ধরি ওর রোমশ হাত
'তামাম পৃথিবী তোর', ফিশফিশিয়ে বলি, 'এই নে! নে না! তামাম পৃথিবী তোর!'

মোমের মতো গলতে গলতে বের হয়ে এলে হাত
আমার নপুংশক প্রেমিক বলে, 'ঘরে তোর বর, আমারও একটা সাদাসিধে বউ,
থাক না এসব!'

যার সবই আছে, না চাইতেই সব সে পেয়ে যায়
সব পাওয়া যার নিয়তি, সে কিছুই নেয় না

কিছুই নেয় না সে। তার কোনও লোভ নেই।
তার কোনও আবেগ অথবা অনুভূতি নেই। ছিল না।
মাটি কিংবা পাথরের শরীর তার।

সে একটা পাষাণ সুপুরুষ।




আদিতে কবিতা (ইনস্ট্যান্ট পয়েম) : আমি তাকে সবই দিতে চেয়েছিলাম

কিছুই নেবে না সে। তার কোনও লোভ নেই।
তার কোনও আবেগ অথবা অনুভূতি নেই। ছিল না।
মাটি কিংবা পাথরের শরীর তার।

নিঝুম অন্ধকারে তার গা ঘেঁষে দাঁড়ালে তার শরীরেও অন্ধকারময় নিরুত্তাপ
সে খেলে না আমায় নিয়ে তার বউয়ের মতোন
আমার অঙ্গে অঙ্গে বিপুল মাৎশার্য্য দাহন
আমি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করি তার সংসার
আমাকে সুখ দেয় অনিন্দ্য রহস্যের পরকীয়া পাপ

একটা ধারালো তরবারি তার চোখের সামনে খাপ থেকে খুলে তার হাতে দেবো তুলে
আর তার নির্জন শয্যায় একটা আগুন শরীর বিছিয়ে দেব
ভেবেছি কতোদিন

ও একটা বড্ড সুপুরুষ, সারাবেলা বউকে প্রেম দেয়
ও একটা বউপোষা কাপুরুষ, নিপাতনে সঙ্গম শেখে নি

ও এতো ভালো কেন?
ও এতো পাষাণ কেন?

আমরা যাই লং ড্রাইভে, রিক্‌শায় সারা শহর
পার্কে, রেস্তরাঁয়, সিনেকমপ্লেক্সে মুভি দেখি
আলগোছে অন্ধকারে ওর হাতের আঙুল নাড়ি মুঠো ভরে
তারপর ব্লাউজের ভাঁজ গলিয়ে বুকের উপর ঠেঁসে ধরি ওর লোমশ হাত
'তামাম পৃথিবী তোর', ফিশফিশিয়ে বলি, 'নে! নে না! তামাম পৃথিবী তোর!'

মোমের মতো গলতে গলতে বের হয়ে এলে হাত
আমার নপুংশক প্রেমিক বলে, 'ঘরে তোর বর, আমারও একটা সাদাসিধে বউ,
থাক না এসব!'

কিছুই নেবে না সে। তার কোনও লোভ নেই।
তার কোনও আবেগ অথবা অনুভূতি নেই। ছিল না।
মাটি কিংবা পাথরের শরীর তার।

সে একটা নিরেট নপুংশক।





পাদটীকা নিষ্প্রয়োজন নয়। একটা লেখা প্রথমে যে থিমটার উপর দাঁড়িয়ে যায়, কোনো কোনো সময় বারবার এডিট করার পর তার আদি রূপ অনেকখানিই বদলে যায়, এমনকি মূলভাবও। আমার ক্ষেত্রে এটা ঘটে থাকে। এ লেখাটা এ নিয়ে ৩য় বার পোস্ট করা হলো। মনের মধ্যে ভীষণ একটা অতৃপ্তি বা যন্ত্রণা, যা ভাবছি তা প্রকাশিত হচ্ছে না, এজন্য। ৩ বার পোস্ট করার জন্য ক্ষমা চাইছি।


প্রকাশ করা হয়েছে: কবিতা বিভাগে । সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:২৫


  • ৬ টি মন্তব্য
  • ৩৪ বার পঠিত,
আপনি রেটিং দিতে পারবেন না
পোস্টটি ০ জনের ভাল লেগেছে, ০ জনের ভাল লাগেনি
১. ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:৪০
comment by: রিসাত বলেছেন: Interesting lekha... Nice... Take care...

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:৫৩

লেখক বলেছেন: হ্যাঁ, ইন্টারেস্টিংই বটে:):)



২. ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১১:৫৬
comment by: সরসিজ আলীম বলেছেন: তাড়াহুড়া করে পড়লাম। বইমেলা অনেক সময় শুষে নিচ্ছে ভাই।

ভালো লাগছে। আমার কবিতার ধরণের কাছাকাছি বলে মনে হলো । আবার নাও হতে পারে । আমার কিছু কবিতা পড়ে একটু মিলিযে দেখবেন তো!

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১২:১৩

লেখক বলেছেন: তাড়াহুড়ো করে হলেও পড়বার জন্য ধন্যবাদ।



৩. ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১:২৯
comment by: পাপী ০০৭ বলেছেন: বাহ ! এক ঘরে দুটো দেয়াল।

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১:৫৮

লেখক বলেছেন: দেয়ালটা কাঁচের:):)