সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০১৫

আজ সকালে, এই ঘোরের ভেতর আমি মরে যেতে চাই

কোনো কোনো সকালে ম্যাজিক থাকে,
চারদিক কেন এতো ভালো লাগে জানি না। একদঙ্গল ঢেউ
উথলে ওঠে বুক থেকে। বিপুল চাঙ্গা একটা বাতাসের ঝাপটা
সুড়সুড় ঢুকে পড়ে নাকের গভীরে।
অদ্ভুত একটা গন্ধ পৃথিবী জুড়ে ছাপিয়ে ওঠে, শৈশবে মায়ের বুকে
মুখ গুঁজে যে-স্বাদ পেয়েছিলাম, মনে হয়,
মোহন অদৃশ্যে কোথাও মা তার বিছানা বিছিয়ে বসে আছে
স্মিতহাস্যে। আমার কী যে ভালো লাগে, সংজ্ঞাতীত সেই ভালো লাগা।

আজ আমার সবকিছু ভালো লাগে। সবকিছু সাংঘাতিক সুন্দর।
সবগুলো মানুষের মুখ স্বর্গীয় নির্মল। যেদিকে তাকাই,
পবিত্র শুভ্রের ফুল হাস্যমুখর। আজকের দিনটা ভয়ানক সুন্দর।
অসহ্য যন্ত্রণার মতো অগুনতি সুখে
আজ আমার বুক ভরে আছে। আজ আমি প্রাণ ভরে ভালোবাসি।
আজ আমার খুলে গেছে দরাজ হৃদয়। আজ আমি প্রাণ ভরে ভালোবাসি।

এমন অবাধ্য সুখের ভেতর আজ আমার মরে যেতে সাধ হয়।
এমন সুখের মুহূর্ত জীবনে বার বার আসে না। এখন আমি ঘোরের ভেতর।
একটু পরই, কে জানে, আমার ঘোর কেটে যাবে।
বাইরে অজস্র বিস্ফোরণ, মৃতের আহাজারি।
স্বাভাবিক মৃত্যুর লিপ্সায় মানুষের আকুলতা।
ক্ষমতার কাছে মানুষ অসহায়! মসনদের মোহে পুড়ে যায় সোনার বাংলা,
দলে দলে লাশ হয় মানুষ। ক্ষমতাবানদের টনক নড়ে না।
ক্ষমতার জন্যে তো মানুষই মরবে। তা না হলে
কীভাবে হবে ক্ষমতার জয়! স্থির লক্ষ্যে অবিচল থেকে এভাবেই তাঁরা
মানুষের লাশ গোনেন, আর নিজ নিজ জিদ ও অহমিকায়
সুদৃঢ় সতেজ হন তাঁরা।

আজ আমি মরে গেলেই ভালো।
এই যে যেখানে আমি দাঁড়িয়ে আছি, একগুচ্ছ মনোরম ফুলের পাশে,
এখানে মরে যাওয়ার মতো এমন নিরাপদ মৃত্যু কার ভাগ্যে জোটে!

৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন